Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
Tajimul Islam Arrest

চোপড়া: অভিযুক্তের ক্ষমতার উৎস খোঁজা জরুরি 

চোপড়ার ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও তা খুব একটা বড় ব্যাপার নয়। সেই অভিযুক্ত হয়তো কিছুদিন পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যাবে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৬
Share: Save:

সমাজে আইন ও মানবাধিকার বলে কিছু আছে কি না, তা চোপড়ার ঘটনায় জনমানসে নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিল। রাস্তার মাঝে ফেলে এক ব্যক্তি ও এক তরুণীকে ফেলে পেটানো হচ্ছে। কঞ্চির গোছা দিয়ে তাঁদের মারা হচ্ছে। তাঁদের লাথি মারা হচ্ছে। বহু লোক দাঁড়িয়ে ওই দৃশ্য দেখে যাচ্ছেন। এ ছবি তো তালিবানি শাসনে দেখা যায়। এ ধরনের আইনবহির্ভূত অপরাধ কখনই কাম্য নয়। শুধু এক জনকে নয়, এই অপরাধের সঙ্গে যারা পরোক্ষ ভাবেও জড়িত, তাদের সকলকেই আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। নয়তো, ভবিষ্যতে দুষ্কৃতীরা আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়ে ফের প্রকাশ্যে এই ধরনের অপরাধ ঘটানোর সাহস পাবে।

চোপড়ার ওই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও তা খুব একটা বড় ব্যাপার নয়। সেই অভিযুক্ত হয়তো কিছুদিন পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যাবে। মূল কথা হল, এ রকম অপরাধ রুখতে হবে। তাই চোপড়ায় ওই ব্যক্তি ও তরুণীকে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনার তদন্তে পুলিশকে গোড়ায় যেতে হবে। কী কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রকাশ্যে এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পেল, তা খুঁজে বার করতে হবে। নয়তো, নানা জায়গায় প্রভাবশালীদের মদতে এ ধরনের দুষ্কৃতীদের আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বাড়বে। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে সমাজের মানুষ রেহাই পাবেন না। পাশাপাশি, সমাজের সর্ব স্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। ঘটনার দিন বহু লোকের সামনে ওই ব্যক্তি ও ওই তরুণীকে রাস্তায় ফেলে পেটানো হল। অথচ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ প্রতিবাদ করে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করলেন না। আইন নিজের হাতে নেওয়া ঠিক নয়, তা কেউ অভিযুক্তকে এক বার বললেনও না। আসলে, ঘটনার সময়ে জনতার ওই ভিড়ে নিশ্চয় অনেকেই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। অভিযুক্ত কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি বলে আমার ধারণা।

সমাজে যে কোনও অপরাধের ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করার এই সাহসটা কিন্তু সবার মধ্যে আসা জরুরি। ন্যায়ের পথে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে রাষ্ট্রশক্তি, পুলিশ ও প্রশাসন আইনের পথে চলতে বাধ্য হয়, তা ইংরেজ আমলে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়ে এ দেশের মানুষ দেখেছেন। আর চোপড়ার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের উর্ধ্বে নয়। ঘটনার পরেই পুলিশের অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা উচিত ছিল। হয়তো, সেখানেও পুলিশ প্রভাবশালীদের ভয়ে অভিযুক্তকে ধরতে দেরি করেছে। কিন্তু পুলিশ দাবি করেছে, ঘটনাটি জানত না বলে। ঘটনা যা-ই হোক, এর পর থেকে পুলিশ কোনও রাজনৈতিক রং ও প্রভাব বিচার না করে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।

(চিকিৎসক-শিক্ষক, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE