হীরকব্রত সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি পুরসভার এক চিকিৎসককে হেনস্থার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগকে কেন্দ্র করে বুধবার টানাপড়েন চলল পুলিশ এবং পুর প্রশাসনের মধ্যে। পুলিশের পাল্টা দাবি, কর্তব্যরত এক মহিলা পুলিশকর্মীর গায়ে হাত দিয়েছেন হীরকব্রত সরকার নামে ওই চিকিৎসক।
ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার। কার্নিভালের কারণে হিলকার্ট রোডের সফদর হাসমি চক থেকে মহানন্দার লালমোহন মৌলিক নিরঞ্জন ঘাট পর্যন্ত আঁটসাঁট সুরক্ষাবলয় তৈরি করেছিল পুলিশ। সেই সুরক্ষাবলয়ে প্রবেশের জন্য পুরসভা থেকে নির্দিষ্ট কয়েক জনকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়। পুলিশের অভিযোগ, ওই চিকিৎসক লালমোহন মৌলিক নিরঞ্জন ঘাট থেকে কার্নিভালের মূল মঞ্চের দিকে প্রবেশ করার চেষ্টা করছিলেন কোনও পরিচয়পত্র ছাড়া। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের উইনার্স বাহিনী ব্যারিকে়ডের বাইরে তাঁকে আটকে দিলে তাঁর সঙ্গে কর্তব্যরত মহিলা পুলিশকর্মীদের বচসা বাধে। সেই সময়েই এক মহিলা পুলিশকর্মীর গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হীরকব্রতের বিরুদ্ধে। এর পরেই ওই চিকিৎসককে আটক করে শিলিগুড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। একটি অভিযোগও দায়ের হয়। যদিও তাঁকে পিআর বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয় পরে।
এর পর মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার শেরিং ওয়াই ভুটিয়ার কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন হীরকব্রত। অভিযোগে তিনি জানান, কার্নিভালের দিন তিনি মহাত্মা গান্ধী মোড়ে ডিউটিতে ছিলেন। কিছু পুলিশকর্মী গিয়ে তাঁকে জনসাধারণের সামনেই হেনস্থা করেন। তাঁকে শারীরিক ভাবেও নিগ্রহ করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তাঁর ফোন। অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা তাঁর কোনও কথাতেই কর্ণপাত করেননি। অভিযোগপত্রে হীরকব্রত জানান, কার্নিভালে কাজ করতে গেলে যে পরিচয়পত্র দরকার, সে বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না। সেটা তাঁকে জানানোও হয়নি। এর পর তাঁকে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে বসিয়ে রাখে। পরে জোর করে তাঁকে শিলিগুড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর ঘটনার বিবরণ লিখিয়ে ছাড়া হয় তাঁকে। হীরকব্রত অবশ্য এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এটা অভ্যন্তরীণ বিষয়। সমাধান হয়ে গিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এ বিষয়ে আমি আর কিছু বলতে চাই না।’’
পুলিশ অবশ্য অন্য কথা বলছে। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) রাকেশ সিংহ বলেন, ‘‘কর্মরত পুলিশকর্মীর গায়ে হাত দিয়েছেন উনি। ইউনিফর্মে হাত দিয়েছেন। তাঁর কাছে শুধু পরিচয়পত্র চাওয়া হয়েছিল। কার্নিভালের কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলো উপেক্ষা করেই উনি ঢুকতে চাইছিলেন। তাতেই বচসা শুরু হয়। উনি নিজেকে ডাক্তার বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু পরিচয়পত্র দেখাতে পারেননি। পরে ওঁকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়। পিআর বন্ডে ছাড়া হলেও গোটা বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান এখনও চলছে। প্রাথমিক ভাবে একটি ডায়েরি দায়ের করা হয়েছে।’’
শিলিগুড়ি পুরসভার কমিশনার শেরিং ওয়াই ভুটিয়া বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ। আমরা খতিয়ে দেখছি বিষয়টি।’’ পুরসভার ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘খুব সুষ্ঠু ভাবে কার্নিভাল আয়োজিত হয়েছে। কোথাও কোনও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেনি। তবে পুলিশের সঙ্গে আমাদের এক ডাক্তারের এই ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। পুলিশ একটা অভিযোগও দায়ের করেছে৷ পুলিশ বিষয়টি নিয়ে অবগত। আমিও কথা বলব ডাক্তারবাবুর সঙ্গে। কী হয়েছে, না-হয়েছে, জানব। তার পর যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy