Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

পঞ্জির আতঙ্কে কাজ ফেলে ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরার তাড়া 

ভিন্ রাজ্যে কেউ কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। কেউ রাজমিস্ত্রির। নতুন নাগরিকত্ব আইনে আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে ওঁদেরও।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৪
Share: Save:

ভিন্ রাজ্যে কেউ কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। কেউ রাজমিস্ত্রির। নতুন নাগরিকত্ব আইনে আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে ওঁদেরও। কারও আধার কার্ডে নামের ভুল রয়েছে। কারও ভোটার কার্ডে। কারও কারও আবার আধার কার্ডই করা হয়নি। কোচবিহারে ফিরে সেইসব সংশোধন করাতে হন্যে হয়ে ঘুরছেন সকলে। এই আইন নিয়ে স্পষ্ট কেউই কিছু জানেন না। তবে কাগজপত্র ঠিক না থাকলে যে কোনও সময় সমস্যায় পড়তে হতে পারে, এমনই আতঙ্কে কাঁটা ওঁরা। সোলেমান খোন্দকার, আমির হোসেন, মকসেদুল হক, পঙ্কজ বর্মণদের মতো অনেকেই জানালেন, চারদিকে যা শুনছেন তাঁরা, তাতে কাগজপত্র ঠিক রাখতে হবে। তাই বাড়ি ফিরে এসেছেন। সব ঠিকঠাক করে আবার কাজে ফিরবেন বলে জানালেন ওঁরা।

কোচবিহার থেকে প্রতি বছর বহু মানুষ কাজের জন্য ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দেন। দিল্লি, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ থেকে কর্নাটক সব জায়গাতেই এই জেলার বাসিন্দা কর্মরত। তাঁদের টাকাতেই চলে সংসার। সেই টাকা স্থানীয় অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলে।

অভিযোগ, বরাবরই ভিন্ রাজ্যের এই শ্রমিকদের নিয়ে টানাপড়েনের রাজনীতি চলে। দিল্লি থেকে আধার কার্ডে নাম সংশোধন করাতে আসা জেলার এক বাসিন্দা জানালেন, বামেদের সময় তৃণমূল অভিযোগ করত, তাঁদের মতো শ্রমিকদের শুধু ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে বামেরা। ভোটের সময় তাঁদের ভিন রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয়। এখন একই অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধেও উঠেছে। এঁদেরই একজন পুন্ডিবাড়ির আমির হোসেন। জেলায় কোনও কাজকর্ম না পেয়ে বেঙ্গালুরু চলে গিয়েছেন আমির। সেখানে রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি কোচবিহার জেলা ডাকঘরে নতুন আধার কার্ডের জন্য এসেছেন। তাঁর কথায়, “কাজের জন্য বাইরে থাকি। তাই আধার কার্ড করা হয়নি। এখন যা অবস্থা, দ্রুত এসব করে নিতে হবে। সেই জন্যেই বাড়ি ফিরেছি।”

জেলা ডাকঘরের পক্ষ থেকে অবশ্য নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখন পর্যন্ত যা নাম নথিবদ্ধ হয়েছে, তাতে নতুন করে আর নাম নেওয়া যাচ্ছে না। মার্চের প্রথম সপ্তাহে ফের যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। কারও খুব জরুরি থাকলে যেসব ব্যাঙ্কে ওই কাজ হচ্ছে, সেখানে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দিনহাটার সাবেক ছিটমহল পোয়াতুর কুঠির বাসিন্দা সোলেমান খোন্দকার গুড়গাঁওতে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তাঁর ভোটার ও আধার কার্ডে নামের মিল নেই। তা সংশোধন করাতেই এসেছেন তিনি। ওই এলাকারই বাসিন্দা মকসেদুল হক পরিবার নিয়ে হায়দরাবাদে থাকেন। তাঁর ছেলেমেয়ের আধার কার্ড নেই। সেই কার্ড করাতে ফিরে এসেছেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক তথা দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “গত কয়েকদিনে যা ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিতে হয়েছে, তা গত ছ’মাসেও দিতে হয়নি। ভিন রাজ্য থেকে ফিরেছেন এমন অনেকেই যোগাযোগ করছেন।” বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “কোথাও কোনও আতঙ্ক নেই। তৃণমূল মিথ্যে প্রচার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

CAB NRC State
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy