Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Bomb Blast

ভয়ে কাঁটা সুজাপুর

শুধু হাসপাতালেই নয়, এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সুজাপুরে বাসিন্দাদের মধ্যেও। সকলেই ঘটনার কথা ভেবে শিউরে উঠছেন। সকলেরই প্রশ্ন, কী ভাবে এই কাণ্ড হল? 

বিস্ফোরণ স্থলে শ্রীরূপা মিত্র-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

বিস্ফোরণ স্থলে শ্রীরূপা মিত্র-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা। নিজস্ব চিত্র

জয়ন্ত সেন 
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৭:০৯
Share: Save:

বিস্ফোরণের ঘোর কিছুতেই কাটছে না। আতঙ্ক এতটাই যে, হাসপাতালে শুয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি। চোখ বুজলেই ভেসে উঠছিল বিস্ফোরণের সেই ভয়াবহ দৃশ্য, আর বিকট সেই শব্দ। এখনও কাঁটা হয়ে আছেন ওই কারখানার জখম মহিলা শ্রমিক জুলেখা বিবি।

শুধু তিনিই নন, বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কানে তালা লেগে গিয়েছে ওই কারখানার ১৪ বছরের শ্রমিক মোফাজ্জল শেখের। সে-ও বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে শুয়ে আতঙ্কে দু’চোখের পাতা এক করতে পারেনি। আর এক শ্রমিক, ১২ বছরের হাসিব প্রামাণিক এখনও ডান কানে কিছু শুনতে পাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার তাকে সুজাপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। শুক্রবার মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণে জখম হয়ে কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই ৫০ বছরের মুসা শেখের। বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয়েছে তাঁকে।

শুধু হাসপাতালেই নয়, এই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সুজাপুরে বাসিন্দাদের মধ্যেও। সকলেই ঘটনার কথা ভেবে শিউরে উঠছেন। সকলেরই প্রশ্ন, কী ভাবে এই কাণ্ড হল?

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে এগারোটা নাগাদ মালদহের সুজাপুরের ঝাবড়া গাইনপাড়ায় একটি পুরনো প্লাস্টিকের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ওই বিস্ফোরণে ৬ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আরও ছ’জন শ্রমিক জখম হন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে তাঁরা চিকিৎসাধীন।

জুলেখা বিবি বলেন, ‘‘ওই সময় আমি কাটিং মেশিনের কাছেই ছিলাম। প্লাস্টিকের টুকরো একটি বস্তায় ভরে রেখে টিফিন খেতে যেতাম সকলে মিলে। কিন্তু আচমকা মেশিনটির কাছ থেকে বিকট আওয়াজ হল। মাটি কেঁপে উঠল। তার পর আমার আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান এল, দেখলাম হাসপাতালে শুয়ে আছি, শরীর রক্তে ভেজা।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বেঁচে আছি এটাই বড় ব্যাপার।’’

ওই কারখানাতেই কাজ করত মোফাজ্জল। সে বলে, ‘‘বিস্ফোরণের সময় আমি গেটের কাছে ছিলাম। কয়েকটা লোহার টুকরো ছিটকে এসে আমার মুখে চোখে লাগে। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। কানে এখনও তালা লেগে আছে। বেঁচে যাব ভাবতে পারিনি।’’ আর এক কিশোর শ্রমিক হাসিব বলে, ‘‘আমিও কারখানার গেটের কাছে ছিলাম। লকডাউনের পর বৃহস্পতিবারই প্রথম কারখানায় গিয়েছিলাম। বিস্ফোরণের পরে একটা লোহার টুকরো এসে মাথায় লাগে। মাথা ফেটে রক্ত ঝরতে থাকে। এখনও ডান কানে কিছু শুনতে পাচ্ছি না। আতঙ্কে ঘুমোতেও পারছি না।’’

সুজাপুরে একাধিক বাসিন্দা এদিন বলেন, ‘‘প্লাস্টিকের কারখানায় এমন বিস্ফোরণ হতে পারে, তা আমরা ভাবতেই পারছি না। এখনও আতঙ্ক যাচ্ছে না।’’

তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Blast Sujapur Traumatized
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE