এক দশক বা দুই দশক নয়, টানা ৬৫ বছর। এখনও শিলিগুড়ির ডাম্পিং গ্রাউন্ড বা ভাগাড়ের সমস্যার সমাধান করতে পারেননি পুর কর্তৃপক্ষ।
এর মধ্যে বামফ্রন্ট সরকারের আমল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে পুরবোর্ডে ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম পরিচালিত বোর্ড। তার আগে-পরে কখনও কংগ্রেস, কখনও তৃণমূলও অল্প দিনের জন্য হলেও সরাসরিভাবে চালিয়েছে পুরবোর্ড। কিন্তু ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা কোনও পক্ষই আজ অবধি কোনও পুরবোর্ড মেটাতে পারেনি বলে শহরবাসীর অভিযোগ। আবার একটা পুরভোট দোড়গোড়ায় কড়া নাড়ছে। শিলিগুড়ির বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের বক্তব্য, ভোটের আগে তো ডান-বাম সব পক্ষই নানা আশ্বাস দেয়, আর সেখানে নিশ্চয়ই ভাগাড় ঘিরে দূষণের বিষয়টিও থাকবে। কিন্তু আগামী পুরবোর্ডের মেয়াদকালে আদৌও সমস্যা মিটবে তো?
পুরসভার নথি বলছে, স্বাধীনতার দু’বছর পর ১৯৪৯ সালে শিলিগুড়ি পুরসভা গঠিত হয়। ১৯৫৫ সাল থেকে সেবক রোড, ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া এলাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করে শহরের যাবতীয় আবর্জনা, জঞ্জাল ফেলছে পুরসভা। ১৯৯৪ সালে শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যালিটি থেকে কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। কিছুটা আয়তনে বাড়ে শহর। তাতে রোজকার জঞ্জালের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ে শুরু করে। কিন্তু বদলায়নি পরিস্থিতি। কয়েক দশক মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন জৈব এবং অজৈব আবর্জনা ভাগাড়ে পড়ে আছে পাহাড়ের মতো। স্থানীয় বিধায়ক গৌতম দেবের দেওয়া ১ কোটি টাকায় ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সীমানা প্রাচীর তৈরি হলেও বহু জায়গায় আবর্জনার চাপে তা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ। উপচে রাস্তায় চলে এসেছে জঞ্জাল।
এর সঙ্গে রয়েছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আগুন লাগার ঘটনা। তার জেরে ধোঁয়ায় ভরে যায় শহর। মাদকাসক্তদের দেখাও মেলে সেখানে। অথচ এর কাছাকাছি শহরের বেশ কয়েকটি নামকরা স্কুল এবং একটি কলেজ রয়েছে।
শহরবাসীর দাবি, বাম আমল থেকে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডকে ঘিরে পরিকল্পনার অভাব ছিল না। ফুলবাড়ির পুঁটিমারিতে জমি কিনেও স্থানীয়দের প্রতিরোধে নতুন ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করতে পারেনি পুরসভা। জ্যোতি বসুর আমলে কখনও বিনোদন পার্ক বা পরে সার কারখানা, কখনও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বা কখনও গ্রিনফিল্ড তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল পুরসভা। জার্মানি, দুবাই বা সুইৎজ়ারল্যান্ডের সংস্থা শহরে এসে প্রজেক্ট দেখালেও তা আজও বাস্তাবায়িত হয়নি। শহরবাসীর অভিযোগ, ‘‘পুরসভায় যখন যে-ই ক্ষমতায় থাকুক, সুসংহভাবে ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করেও শেষ অবধি টাকার সমস্যা বা প্রযুক্তির কথা বলে কাজ করেনি পুরসভা।’’
এলাকাটি মন্ত্রী গৌতমবাবুর বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। তিনি বলেন, ‘‘বামেরা পুরবোর্ডে কয়েক দশক থেকেছে। অশোক ভট্টাচার্য ২০ বছর পুরমন্ত্রী ছিলেন। ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে কিছুই করেননি। আমরা যা করে দিয়েছিলাম, তাও নষ্ট করেছে।’’ জবাব দিয়েছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ‘‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে আমরা সব সময় ভেবেছি। নানা কারণে সমস্যা মেটেনি। প্রকল্পের আর্থিক জোগানের বিষয়ও রয়েছে। এখন ‘বায়ো মাইনিং’ প্রক্রিয়ায় কাজের কথা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy