জলের-তোড়ে: নদীর জলে নাগরাকাটায় ভাঙল রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।
নদী গতিপথ বদলে গ্রামের দিকে তেড়ে যাচ্ছে। সোমবার রাত থেকে ভাঙছে জয়ন্তী নদীর পাড়। চাষের জমি তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের আদিবাসী মহল্লা জয়পুর এবং জিৎপুর, অর্জুনপাড়া সহ বেশ কিছু এলাকায় মানুষ উদ্বিগ্ন। বর্ষার মরসুমের শুরুতেই এই যদি হয়, আর ক’দিন পরে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় এলাকার মানুষ।
এক রাতের প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে নাগরাকাটা ব্লকও। ব্লকের বিভিন্ন এলাকা হড়পা বানের কবলে পড়ে। কোথাও ভেঙে পরে শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, কোথাও আবার সড়ক ভেঙে যাতায়াত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। গত সোমবার রাতভর বৃষ্টি চলে নাগরাকাটাতে। মঙ্গলবার ভোর থেকেই জলের দাপটে জনজীবন ব্যাহত হতে শুরু করে। নাগরাকাটার মনমোহন ঝোরার প্রবল স্রোতে একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের কিছু অংশ জলে ভেঙে পড়ে, কিছু অংশ বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ে।
কুজি ডায়না নদীর জলে নাগরাকাটা ব্লকের লুকসান এলাকা জলবন্দি হয়ে পরে। নদীর পাড়ের বেশ কিছু বসতি এলাকার হাঁস মুরগিও ভেসে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। নাগরাকাটা থেকে ঝাড়টণ্ডুগামী প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার পথে প্রায় ৫০ মিটার সড়ক ঝোরার জলে ভেঙে যায়। বিপর্যস্ত হয়ে পরে ঝাড়টণ্ডু গ্রামের পাঁচ হাজার বাসিন্দা। এই এলাকাতে দু’টি বাড়িও ধসে যায়। ডায়না নদীর জলোচ্ছ্বাসে আংরাভাসা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘেঁষা এলাকাতে নদী বাঁধের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয়েছে। নাগরাকাটার পাশাপাশি বানারহাট আরও একবার হাতিনালা ঝোরার জলে প্লাবিত হয়ে পরে। মেটেলি ব্লকের বিধাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতেও নেওরা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মালবাজার শহর লাগোয়া মালনদীও মঙ্গলবার সকাল থেকে ফুঁসতে শুরু করে। শহরের ২, ১১, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। তিস্তার মালবাজার ও ময়নাগুড়ি ব্লক লাগোয়া চাঁপাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। মালবাজারের মহকুমাশাসক সিয়াদ এন বলেন, “নাগরাকাটা এলাকাতে ঝোরাতে আমরা নজর রেখেছি। সড়ক মেরামত করে দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনের কাজ চলছে।”
পাহাড়ের পাশাপাশি সমতলেও বৃষ্টির জেরে জল দুর্ভোগ শুরু হয়ে গেল আলিপুরদুয়ার জেলায়। সোমবার গভীর রাত থেকেই আলিপুরদুয়ার জেলার নদীগুলি ফুলে ফেপে উঠতে শুরু করে। সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। মাদারিহাটের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে টোটোপাড়া। তবে দুপুরের পর নদীগুলির জল কমতে শুরু করায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসিমারায় বৃষ্টি হয় ১৬৭ মিলিমিটার। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১২ মিলিমিটার। মঙ্গলবার বেলার দিকে তোর্সা ও কালজানিতে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়। আলিপুরদুয়ার শহরের কাছ দিয়ে যাওয়া একাধিক নদীর জল উলটো দিকে বইতে শুরু করায় আতঙ্ক ছড়ায়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy