ছবি: সংগৃহীত।
পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে নিজের মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে কিশোরী কন্যাকে খুন করে গঙ্গার জলে ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ভূতনি থানার মহেন্দ্রটোলা গ্রামে। শনিবার সকালে বস্তাবন্দি ওই কিশোরীর মৃতদেহ সাইকেলে করে নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গা ঘাটে এবং নৌকায় করে মাঝ নদীতে গিয়ে সেই দেহ গঙ্গায় ফেলা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ভুতনি থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে এবং বাবা ও মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই কাণ্ডে আরও এক আত্মীয়কে খুঁজছে পুলিশ। এ দিকে গঙ্গায় ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধারে জোর তল্লাশি শুরু করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। সে জন্য স্পিডবোট নামানো হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় মাঝিরাও নৌকা নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই কিশোরীর নাম প্রতিমা মণ্ডল (১৫)। সে স্থানীয় একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত। বাবা ধীরেন মণ্ডল পেশায় দিনমজুর। মানিকচক ব্লকের ভুতনি থানার দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রটোলায় তাঁদের বাড়ি। বড় মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট মেয়ে প্রতিমার সঙ্গে পাশের গ্রামের দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। বাবা ধীরেন এবং মা সুমতি এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাননি বলেও পড়শিদের দাবি। এই নিয়ে নাকি গত বেশ কয়েক দিন ধরে বাড়িতে অশান্তি চলছিল।
এ দিন সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ ধীরেন, সুমতি ও তাঁদের এক আত্মীয়কে একটি ভারী চটের বস্তা সাইকেলে চাপিয়ে গঙ্গার দিকে নিয়ে যেতে দেখেন গ্রামবাসীরা। শুধু তাই নয়, বেশ কিছুক্ষণ পরে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে সেই চটের বস্তাকে একটি নৌকায় তোলা হয় এবং নৌকাটি মাঝ গঙ্গায় গেলে সেই বস্তা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অনেকের দাবি। প্রত্যক্ষদর্শীদের এই ঘটনায় সন্দেহ হয়। তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে ভূতনি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ধীরেন ও সুমতি তাঁদের মেয়ে প্রতিমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে চটের বস্তায় ভরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছেন। ওই দম্পতির লক্ষ্য ছিল, তাঁদের পরিবারের এই ঘটনা যেন কেউ জানতে না পারে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরীর দেহ সাইকেলে চাপিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গঙ্গার ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে গঙ্গার তীরে দেহটি পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু গর্ত খুঁড়লে লোকজন বিষয়টি জেনে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় শেষে ধীরেনরা ঠিক করেন, নৌকায় মাঝ গঙ্গায় গিয়ে সেখানে ব্যাগটি ফেলে দেবেন। পুলিশি তদন্তে দাবি, চটের ব্যাগ ভারী করতে বড় পাথরও ভরে দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেই মৃতদেহ খুঁজতে এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের একটি দল স্পিডবোট নিয়ে গঙ্গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, গঙ্গার ঘাট থেকে একটি কোদাল উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি খুনের মামলা রুজু করেছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, কিশোরীর বাবা মেয়েকে খুন করার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘মেয়েকে খুন করার অভিযোগে বাবা ও মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় কিশোরীর এক আত্মীয়কে খোঁজা হচ্ছে। গঙ্গা নদী থেকে কিশোরীর দেহটি উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy