Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
TMC Conflict

তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’, দু’সপ্তাহ তালাবন্ধ খারিজা বেরুবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতঅফিস

গত ১০ অগস্ট থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। দু’সপ্তাহ হতে চলল, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যে তালা ঝুলছে, সে খবর জানেই না জেলা প্রশাসন। সূত্রের খবর, এ নিয়ে ব্লক থেকে জেলাকে কোনও রিপোর্ট পাঠানো হয়নি।

তালাবন্ধ খারিজা বেরুবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। 

তালাবন্ধ খারিজা বেরুবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস।  ছবি:সন্দীপ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৩৪
Share: Save:

তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী কোন্দলের’ জেরে, টানা দু’সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, অভিযোগ এমনই। অফিসের গেটে ঝুলছে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর লাগানো তালা এবং দলীয় পতাকা। কর্মীরা কেউ অফিসে ঢুকতে পারছেন না। পঞ্চায়েতের কাজকর্ম কার্যত বন্ধ। গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস তালা বন্ধ থাকায় দু’সপ্তাহ ধরে সেখানকার কর্মীরা সদর ব্লক অফিসে গিয়ে হাজিরা দিচ্ছেন এবং ব্লকের কাজকর্ম করছেন। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খারিজা বেরুবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ছবি।

অভিযোগ, গত ১০ অগস্ট থেকে চলছে এই পরিস্থিতি। দু’সপ্তাহ হতে চলল, গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যে তালা ঝুলছে, সে খবর জানেই না জেলা প্রশাসন। সূত্রের খবর, এ নিয়ে ব্লক থেকে জেলাকে কোনও রিপোর্ট পাঠানো হয়নি। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘অফিসের সচিব এবং নির্বাহী আধিকারিকের যাওয়ার কথা। অফিস তালা বন্ধ করে রাখা হয়েছে, এমন কিছু আমায় ব্লক থেকে জানায়নি। খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলছি।’’

জেলা প্রশাসনের কানে খবর যেতেই নড়েচড়ে বসেছে ব্লক। সদরের বিডিও দেবাশিস মণ্ডল দাবি করেন, ‘‘আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। অফিস যে বন্ধ হয়ে রয়েছে, সে বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, শাসক দলের দু’পক্ষের মধ্যে গোলমাল বলেই প্রশাসন দর্শকের ভূমিকায়। খারিজা বেরুবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি আসনের মধ্যে আটটি পেয়েছিল তৃণমূল, ছ’টি বিজেপি। গোলমাল বাধে গত ৯ অগস্ট, বোর্ড গঠনের দিন। তৃণমূলের বিদায়ী প্রধান রিঙ্কু মিত্র সরকার এবং উপপ্রধান মুক্তা বাড়ুইকে সমর্থন না করে প্রধান পদে আরেক জনের নাম প্রস্তাব করেন তৃণমূলের কিছু সদস্য। তৃণমূলের এই ‘বিদ্রোহী’ গোষ্ঠীর সদস্যেরা বিজেপির এক সদস্যকে সঙ্গে নেন। তার ফলে, এই গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা হয় তৃণমূলের প্রতীকে জেতা ছয় এবং বিজেপি থেকে আসা এক জনকে নিয়ে সাত। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির বাকি পাঁচ জন সদস্য প্রধান রিঙ্কু মিত্র সরকার এবং উপপ্রধানকে সমর্থন করেন। তার ফলে ওই পক্ষের সংখ্যাও হয় সাত। দু’পক্ষের সদস্য সংখ্যা সমান হওয়ায় লটারি হয়। তাতে বিজেপি-সমর্থিত দুই তৃণমূল সদস্যই প্রধান এবং উপপ্রধান পদে জিতে যান। সূত্রের দাবি, তার পরেই তৃণমূলের পরাজিত গোষ্ঠী গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে তালা মেরে দেয়।

সূত্রের খবর, এই পরাজিত গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুব তৃণমূলের সদর ব্লক সভাপতি মেহেবুব রহমান। তাঁর দাবি, ‘‘অঞ্চল সভাপতি প্রদীপ মিত্র
নিজের স্ত্রীকে প্রধান করার জন্য বিজেপির সদস্যদের কিনে বোর্ড গড়েছেন। যখন লটারি হয়েছে, তখন যিনি প্রিসাইডিং অফিসার, তিনি নিজে একটি চিরকুট তুলে নিয়েছেন। আমরা এই লটারি মানি না। যত দিন না নিষ্পত্তি হবে, আমরা তালা খুলতে দেব না।’’

প্রধানের স্বামী অঞ্চল সভাপতি প্রদীপ মিত্র বলেন, ‘‘দলের খামে আমার স্ত্রীর নামই প্রধান হিসেবে ছিল। নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।’’ সদর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তরুণ বসু বিশ্বাস বলেন, ‘‘দল আলোচনায় বসবে।’’

জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় বলেছেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর কটাক্ষ, ‘‘গণতন্ত্রকে কী ভাবে খুন করতে হয়, তার জ্বলন্ত উদাহরণ খারিজা বেরুবাড়ি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Conflict Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy