দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। —ফাইল চিত্র
দার্জিলিং পুরসভায় প্রশাসক বসানো নিয়ে আন্দোলনের পথে এ বারে সব ক’টি বিরোধী দল। তাতে এক দিকে যেমন রয়েছে সিপিএম, বিজেপির মতো সমতলের গুরুত্বপূর্ণ দলগুলি, তেমনই রয়েছে পাহাড়ের জিএনএলএফ এবং বিমল গুরুংপন্থী মোর্চাও। এর মধ্যে বিজেপি এ দিন আইনের রাস্তায় যাওয়ার কথাও জানিয়ে দিয়েছে। সিপিএম সূত্রে দাবি, জাতীয় স্তরে তারা বিষয়টিকে তুলে ধরবে।
পাহাড়ে জোটের সকলকে নিয়ে বৈঠক করে আন্দোলনের পথে নামতে চাইছে বিজেপি। একই সঙ্গে এ দিন কলকাতায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘দার্জিলিং পুরসভায় প্রশাসক বসানোর বিরুদ্ধে বিজেপি আইনের রাস্তায় যাবে।’’ রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বুধবার থেকেই পাহাড়ে প্রচার শুরু করেছে
বিমলপন্থী মোর্চা, জিএনএলএফ-সহ বিজেপি জোটের দলগুলি। জোটের বাইরে থাকা পাহাড়ের অন্য দলগুলিকেও রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এক ছাতার তলায় আনার চেষ্টা করছে তারা।
দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করা হয়েছিল বলেই পাহাড়ের মানুষ তৃণমূল ও বিনয় তামাংদের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তার পরও তাদের পরিবর্তন হয়নি। তারা ফের পাহাড়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে হত্যা করছে। সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা এর প্রতিবাদ করব।’’ জিএনএলএফের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘আমাদের জোটের বাইরে থাকা দলগুলিকেও আহ্বান করব রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হতে। আমরা সব দলকে নিয়ে লাগাতার প্রতিবাদে নামব।’’ যদিও বিরোধী আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিনয় তামাং। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিই পাহাড়কে আশান্ত করে চাইছে। তারা ও তাদের সহযোগী দলগুলিই নানাভাবে পাহাড়ের সাধারণ মানুষের মধ্যে উস্কানিমূলক প্রচার করছে। আমরা পাহাড়ে যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, তা ভাঙতে চাইছে।’’
দার্জিলিং পুরসভায় প্রশাসক বসানো নিয়ে এ দিন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যও। বুধবার তিনি অভিযোগ করেন, এ ভাবে নির্বাচিত পুরবোর্ডকে কোনও কারণ ছাড়া ভেঙে দেওয়া অবৈধ। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকের দাবি, ‘‘সংবিধানে ভেঙে দেওয়ার নিয়ম আছে বলেই খুশি মতো ভেঙে দেওয়া যায় না। ঠিক যেমন সংবিধানে ৩৫৬ ধারা আছে বলেই তা খুশি মতো প্রয়োগ করা যায় না। পুরবোর্ডে কোনও ব্যাপক অনিয়ম বা অবহেলা হলে, সেই কারণ দেখিয়ে শো-কজ করতে হয়। তার যথাযথ উত্তর না মিললে ভেঙে দেওয়া যায়। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করাতে হয়।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘দার্জিলিং পুরসভার ক্ষেত্রে যা হল তা বেআইনি। অবিলম্বে এই নির্দেশিকা বাতিল করতে হবে। এবং যে সমস্ত পুর বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অবিলম্বে সেখানে নির্বাচন করাতে হবে।’’ অন্যথায় রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামা হবে বলে তিনি হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি অল ইন্ডিয়া মেয়র ফোরামেও তিনি তুলবেন। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘অশোকবাবুর বক্তব্য নিয়ে কোনও মন্তব্য নয়। উনি চিঠি লিখতে ভালবাসেন। উনি মুখ্যমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখুন। দরকার হলে মামলা করুন।’’
গত ২৯ মে দার্জিলিং পুরসভার ১৭ জন কাউন্সিলর অনাস্থা আনেন। পরে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরে মঙ্গলবার একটি নির্দেশিকা জারি করে পুরবোর্ড ভেঙে প্রশাসক বসিয়েছে রাজ্য সরকার। যদিও এই পুরসভার মেয়াদ শেষ হতে এখনও তিন বছর বাকি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy