কাটমানি-তদন্তে উত্তরকন্যায় পৃথক অভিযোগ কেন্দ্র তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। আর উত্তরকন্যা লাগোয়া ফুলবাড়ির পূর্ব ধনতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ না করেই টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। রাজগঞ্জ বিডিও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে ওই স্কুলের মাঠ উন্নয়নের জন্য এমজিএনআরইজি প্রকল্পে ২ লক্ষ ৮১ হাজার ১৬০ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে ছিল ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের। সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ রায় জানিয়েছেন, কাজ শেষ দেখিয়ে ইতিমধ্যেই প্রকল্পের টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ যে স্কুলের মাঠ উন্নয়নের কথা, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জুলা রায় বর্মণ তো বটেই, স্কুলের অন্য শিক্ষকরাও জানিয়েছেন, প্রকল্পের বিষয়ে তাঁরা কিছুই জানেন না। লিখিত বা মৌখিকভাবেও তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি।
প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘কিছু মহিলা শ্রমিক এসে স্কুল চত্বরের আবর্জনা ও জঙ্গল পরিষ্কার করে গিয়েছিলেন। জিজ্ঞাসা করায় তাঁরা জানিয়েছিলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাঁদের পাঠানো হয়েছে। ব্যস এইটুকুই।’’ তবে কি স্কুলের জঙ্গল পরিষ্কারেই খরচ হল প্রায় তিন লক্ষ টাকা? এই প্রশ্নই এখন ফুলবাড়িতে মুখে মুখে ঘুরছে।
এত দিন কেউ মুখ না খুললেও মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি নিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এমজিএনআরইজি প্রকল্পের প্রতিটি কাজে প্রকল্পস্থলে বড় বোর্ড লাগিয়ে প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক।
স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘স্কুলের পিছনের দিকে একটি বোর্ড লাগানো হয়েছিল। তবে লাগানোর কয়েক দিন পরই সেটি খুলে নেওয়া হয়।’’ যদিও ওই বোর্ডের ছবি এখন বিভিন্ন মহলে ঘুরছে। রাজগঞ্জ ব্লকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সরকারি নিয়ম অনুসারে যে স্কুলে কাজ হবে, সেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর পরে তাদের অনুমতি নিয়েই কাজ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি বলেই জানিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন স্কুলের মোট জমির পরিমাণ প্রায় ১ একর (৩ বিঘা)। প্রাথমিক স্কুল ভবন ছাড়াও ওই জমির একটি অংশে পূর্ব ধনতলা উচ্চ বিদ্যালয়ও তৈরি হয়েছে। বাকি অংশ মাঠ। প্রাথমিক স্কুলের সম্পত্তি হলেও দুই স্কুলই মাঠটি ব্যবহার করে। উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘একটু বৃষ্টি হলেই মাঠে জল জমে যায়। মাঠ দেখলেই যে কেউ বুঝবে, কোনও উন্নয়নই হয়নি।’’
পঞ্চায়েত প্রধান দিলীপ বলেন, ‘‘ওই স্কুলের কাজ আগের প্রধানের আমলে হয়েছে। তাই কাজ হয়েছে কি হয়নি, তার জবাব উনিই দেবেন। আমি ওটা নিয়ে কিছু বলব না।’’ প্রাক্তন প্রধান নীরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘‘অসুস্থ আছি। ওই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে আছে। আর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy