কোথাও সামনের সারিতে তৃণমূল নেতা। কোথাও আবার তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকেই রামনবমীর মিছিলের আয়োজন করা হচ্ছে। যা নিয়ে আপত্তি জানায়নি বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবার কেউই। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ মনে করছে, তৃণমূলের ওই ভুমিকায় আরও মজবুত হবে সঙ্ঘের প্রচার। বিজেপি মনে করছে, তৃণমূলের ওই কর্মসূচিতে আখেরে লাভ হবে বিজেপির। বিশ্বহিন্দু পরিষদ বরাবর রামনবমী উদ্যাপন করে আসছে। পরিষদের কোচবিহার রামনবমী উদ্যাপন সমিতির প্রচার প্রমুখ সুকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্ৰত্যেক হিন্দুর রামনবমী পালন করা প্রয়োজন। যে কোনও দল বা কোনও সংগঠন যদি রামনবমী পালন করে তা ভাল। আমরা চাই সমস্ত হিন্দু এই উৎসবে সামিল হোক।’’
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, তার আগে-আগে বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রামনবমী পালনের হিড়িক পড়ছে তৃণমূলের। এ প্রসঙ্গে বিজেপির কোচবিহার উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক সুকুমার রায় বলেছেন, ‘‘তৃণমূল হিন্দুদের বিরোধিতা করে। সেখান থেকে তারা যদি মানসিকতা পরিবর্তন করে ভাল। তবে তা শুধু ভোটের জন্য নয়, সারা বছর ধরেই করা উচিত।’’ তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে বিশ্বহিন্দু পরিষদ ও বিজেপি। দলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের কথায়, ‘‘রাম শুধু বিজেপি বা বিশ্বহিন্দু পরিষদের নয়। তাই প্রত্যেকেই রামনবমী পালন করতে পারে।’’
আগামী ৬ এপ্রিল রামনবমী। ওই দিন মিছিলের ডাক দিয়েছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ। আবার রাসমেলার মাঠে জমায়েতের ডাক দিয়েছে রামনবমী উদ্যাপন কমিটি। এ দিকে তৃণমূলও কোচবিহার শহর লাগোয়া ধলুয়াবাড়িতে রামনবমীর মিছিলের ডাক দিয়েছে। শিবমন্দিরের মাঠে জমায়েতের আহ্বান জানিয়েছে তারা। ধলুয়াবাড়ির তৃণমূল কর্মী চন্দন দাস বলেন, ‘‘রাম সবার দেবতা। তাই আমরা রামনবমী পালন করব।’’ মারুগঞ্জে রামনবমী নিয়ে অনুষ্ঠানের অয়োজনে সামনের সারিতে রয়েছেন তৃণমূলের তুফানগঞ্জ ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি রাজেশ তন্ত্রী। তিনি দাবি করেন, প্ৰত্যেক বছরই তাঁরা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। সঙ্ঘ পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘তৃণমূল যদি মন থেকে রামনবমীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে তা হলে সমস্যা নেই। কিন্তু নিছক রাজনীতির জন্য হলে, মানুষ তা বুঝে যাবে।’’ গিরীন্দ্রনাথের পাল্টা, ‘‘নিছক রাজনীতির জন্যে ধর্মকে ব্যবহার করে বিজেপি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)