Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

হুমকি-সংস্কৃতি নিয়ে সরব হওয়ায় ‘শাসানি’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বুধবার ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সৌমিত্র কুন্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৬
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘হুমকির সংস্কৃতি’র প্রতিবাদ করায় শাসানির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের একাংশের।

শুক্রবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ওই অভিযোগ তোলেন ‘রেসিডেনশিয়াল মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’-এর পড়ুয়া কৌস্তভ চক্রবর্তী, অরিজিৎ সাহা প্রমুখ। পুলিশের কাছে আলাদা করে অভিযোগের ভাবনাও তাঁরা করছেন বলে দাবি। রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য-প্রশাসনের অন্দরে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ বলে পরিচিত চিকিৎসক গোষ্ঠীর ‘ঘনিষ্ঠদের’ দিকেই তাঁরা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

এ দিনই ওই ‘লবি’র অন্যতম চিকিৎসক অভীক দে-র ‘ঘনিষ্ঠ’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের টিএমসিপি ইউনিটের প্রাক্তন সভাপতি শাহিন সরকার, বর্তমান সভাপতি সোহম মণ্ডল এবং নীলাব্জ ঘোষ নামে নিউরো মেডিসিন বিভাগের এক আরএমও-র বিরুদ্ধে এ দিন মাটিগাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা। ক্যাম্পাসে তাঁকে ঢুকতে নিষেধ করার কথা জানিয়ে অভীক দের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। অন্যথায়, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। পুলিশ জানায়, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ দিন ‘রেসিডেন্সিয়াল ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন’-এর চিকিৎসক পড়ুয়া অরিজিৎ বলেন, ‘‘থ্রেট কালচার’-এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি। জুনিয়রদের সঠিক পথ দেখিয়েছি বলেই মনে করি। তা করতে গিয়ে আমরা শাসানির মুখে পড়েছি। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কলেজ কাউন্সিলের কাছে জানিয়েছি।’’ কারা হুমকি দিচ্ছে? কৌস্তভের জবাব, ‘‘বুঝতেই পারছেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। অনেক স্তর থেকেই চাপ আসছে। তবে তদন্ত চলছে। আমরা আগে থেকে কারও নাম বলতে চাই না। তবে সমাজ মাধ্যমে আমাদের বিপদে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের আশঙ্কা নানা ভাবে আমাদের হেনস্থা করা হবে।’’ পুলিশে অভিযোগ জানাচ্ছেন না কেন? কৌস্তভ ফের বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছি।’’

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বুধবার ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ হয়। সে দিনও এক বিভাগীয় প্রধান মহিলা চিকিৎসক অভিযোগ করেন, ঐর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সক্রিয় থাকায় কলেজের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সে দিন পড়ুয়া-বিক্ষোভের জেরে ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত এবং সহকারী ডিন সুদীপ্ত শীল পদত্যাগ করেন। অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিও ওঠে। অধ্যক্ষ এ দিন বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে অভীক দে, সোহম মণ্ডল, শাহিন সরকারদের। তদন্ত চলছে।’’ অভীক, সোহম, শাহিন, নীলাব্জদের সঙ্গে বহু চেষ্টাতেও এ দিন য়োগাযোগ করা যায়নি।

কলেজ কর্তৃপক্ষের গড়া পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি এ দিন অধ্যক্ষের দফতর লাগোয়া হল ঘরে বসে কাজ করে। তদন্তকারীদের তরফে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আজ, শনিবার তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন বলে কলেজ সূত্রের খবর। কৌস্তভ, অরিজিৎরা জানান, তদন্তের রিপোর্ট ‘সন্দেহনজক’ মনে হলে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবেন। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগও তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে বলে তাঁরা আশাবাদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Medical College Siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE