‘নিয়োগ-দুর্নীতি’ নিয়ে লাগাতার মন্তব্য করতে গিয়ে অন্তত একটি ক্ষেত্রে ভুল স্বীকার করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। কয়েক দিন ধরে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কোন নেতা-মন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা কোন নেতার আত্মীয়েরা সুপারিশে চাকরি পেয়েছেন, তেমন কিছু নাম সমাজ মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করছিলেন বলে দাবি উদয়নের। দু’দিন আগে দিনহাটার পাঁচ মাথার মোড়ের সভা থেকেও উদয়ন কোচবিহার তথা দিনহাটার একাধিক বাম নেতার আত্মীয়-পরিজন বাম আমলে সুপারিশে চাকরি পেয়েছেন বলে দাবি করেন। সেই তালিকায় নাম ছিল সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, প্রয়াত বেণুবাদল চক্রবর্তীর স্ত্রীয়ের।
বেণুবাদলের ছেলে শুভময় ওই দাবি ঠিক নয় বলে দাবি করেন। সাংবাদিক বৈঠক করে শুভময় বলেন, ‘‘মায়ের বয়স ৭৬ বছর। ১৯৬৭ সালে আমার মা মাধ্যমিক পাশ করেন। ১৯৬৯ সালে নিগমনগরে বেসিক ট্রেনিং নিয়েছেন। ১৯৭২ সালে দিনহাটারই একটি প্রাথমিক স্কুলে কয়েক মাস ডেপুটেশনে চাকরি করেন। তার পরে খুটামারায় প্রাথমিক স্কুলে ওই বছরই চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার আট বছর পরে আমার মায়ের বিয়ে হয়। মন্ত্রী উদয়ন গুহ ব্যস্ত মানুষ, তাই হয় তো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি।’’
এর পরেই সোমবার ফেসবুকে উদয়ন লেখেন, ‘‘বেণুদার স্ত্রীয়ের চাকরি ঠিক ভাবেই হয়েছে। ওঁর স্ত্রীয়ের চাকরির কথাটা প্রত্যাহার করলাম। বাকি সব অভিযোগ ঠিক।’’ মঙ্গলবার উদয়ন বলেন, ‘‘ওই বিষয়টি ঠিক ছিল না। উনি আগেই চাকরি পেয়েছিলেন।’’
তা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন বাম নেতারা। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, ‘‘প্রলাপ বকছেন তৃণমূল মন্ত্রী। এর পরে, ধীরে ধীরে সব ভুল স্বীকার করতে হবে।’’ ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুরের মন্তব্য, ‘‘উনি হাসির খোরাক হয়ে উঠছেন।’’ শুভময় বলেন, ‘‘উনি ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে সরে আসার জন্য ওঁকে ধন্যবাদ।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)