Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
Viswakarma Puja

বোনাস অনিশ্চিত, বাগানে বন্ধ বিশ্বকর্মা পুজো 

এ বছর বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই ‘খবর’ এসেছে, ছোট চা বাগানে বোনাস হবে না। পাতার উৎপাদন একেবারেই কম বলে দাবি। কাঁচা পাতা বিক্রি করে ছোট চা বাগান চলে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

অনির্বাণ রায় , পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৮
Share: Save:

জলপাইগুড়ির বন্ধ রায়পুর চা বাগানে এ বার বিশ্বকর্মা পুজো নেই। দীর্ঘদিন ধরে বাগান বন্ধ। কারখানা চত্বর থেকে কবেই পুজো সরেছে। সাদামাঠা আয়োজন করে একটি শ্রমিক লাইনে চাঁদা তুলে পুজো হয়। এ বার সেইআয়োজনও হচ্ছে না।

জলপাইগুড়ির তিস্তা বাঁধের পাশেই রায়পুর চা বাগান। বাগান ছুঁয়ে সড়ক পথ মিশেছে পূর্ব-পশ্চিম মহাসড়কে। সেই সড়ক সোজা চলে যায় আলিপুরদুয়ার। বিশ্বকর্মা পুজোয় নেই আলিপুরদুয়ারেরও বন্ধ কয়েকটি চা বাগান। খোলা বাগানে বিশ্বকর্মা পুজোর তোড়জোর চলল সোমবার দিনভর। বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানের শ্রমিকেরা ‘স্মৃতি’ নিয়ে রইলেন পুজোর আগের দিন। সাধারণত চা বলয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর আগের দিন থেকেই উৎসব শুরু হয়ে যায়। জলপাইগুড়ি হোক বা আলিপুরদুয়ার, খোলা বাগানের পুজোতেও জৌলুস অনেকটাই ফিকে, দাবি চা মহল্লার।

এ বছর বিশ্বকর্মা পুজোর আগেই ‘খবর’ এসেছে, ছোট চা বাগানে বোনাস হবে না। পাতার উৎপাদন একেবারেই কম বলে দাবি। কাঁচা পাতা বিক্রি করে ছোট চা বাগান চলে। পাতার দাম কমে গেলে, উৎসবে মেতে ওঠাও কঠিন, দাবি চা উৎপাদকদের। ছোট বহু চা বাগানে একেবারেই নিয়মরক্ষার আয়োজন হয়েছে এ বছর। আলিপুরদুয়ারের শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, পুজো এলেই একের পরে এক চা বাগান বন্ধ হয়ে যায়। তাই শরৎকাল এলেই আশঙ্কাও ভেসে আসে সাদা মেঘের মতো, দাবি শ্রমিকদের। যার জেরে, বিশ্বকর্মা আসতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে আলিপুরদুয়ারের অনেক চা বাগান শ্রমিকের।

একটা সময় বিশ্বকর্মা পুজো মানেই আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন চা বাগানে পেট ভরে সব শ্রমিকের খিচুড়ি খাওয়ার যে রেওয়াজ ছিল, অনেক জায়গায় এখন সেটা কয়েকটা কাটা ফল বিতরণের মধ্যেই থেমে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান তথা আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া মাঝেরডাবরি চা বাগানের ম্যানেজার চিন্ময় ধর বলেন, “জেলায় কিছু চা বাগান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সেগুলো বাদ দিলে যে সব বাগান বা বাগানের ফ্যাক্টরি চালু রয়েছে, সেখানে এ বারও বিশ্বকর্মা পুজো হচ্ছে।”

শ্রম দফতর সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় ৬৪টি চা বাগানে প্রায় ৯৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন। সেই সঙ্গে অস্থায়ী শ্রমিক মিলিয়ে যে সংখ্যাটা দেড় লক্ষের বেশি।আলিপুরদুয়ারে এখন সাতটি চা বাগান পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। যে বাগানগুলোর কয়েকটিতে পাতা বিক্রির কাজ চললেও কারখানা বন্ধ। তার পরেও অবশ্য কালচিনির একাধিক বাগানে বিশ্বকর্মা পুজোয় ভরপেট না হলেও, শ্রমিকদের খিচুড়ি খাওয়ানোর ব্যবস্থা হতে চলেছে। যাঁরা সেখানে পাতা বিক্রির দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরাই তা করছেন বলে জানা গিয়েছে। তবে আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ের শ্রমিকদের অনেকের অভিযোগ, চা বাগান ছেড়ে শ্রমিকদের অনেকেই ভিন‌্-রাজ্যে রাজ্যে নানা কাজে যাচ্ছেন।

জলপাইগুড়ির রায়পুর চা বাগানের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃণমূল শ্রমিক নেতা প্রধান হেমব্রম বলেন, “শ্রমিকরা সবে পকেট থেকে যা পারেন দিয়ে করম পুজো করলেন। পর পর দুটো পুজো করার সামর্থ্য বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের নেই। তাই এ বছর পুজো নেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy