Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ঘরে জল, পুজো ভুলেছেন মাখনরা

মাখনের স্ত্রী প্রতিমা বলেন, নলকূপগুলো জলের তলায়। তাই সকাল হলেই ছুটতে হচ্ছে জলের খোঁজে। পুজোর মুখে এমনই অবস্থা রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষাধিক বাসিন্দার।

ইংরেজবাজারে উত্তর বালুচর প্লাবিত মহানন্দার জলে। নিজস্ব চিত্র

ইংরেজবাজারে উত্তর বালুচর প্লাবিত মহানন্দার জলে। নিজস্ব চিত্র

বাপি মজুমদার ও জয়ন্ত সেন 
মালদহ ও চাঁচল শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:২২
Share: Save:

বাঁশ কেটে পুজোর কুলো, ডালি তৈরি করেন মাখন হরিজন। এ বারও কাজ শুরু করেছিলেন। এই আয় দিয়েই সারা বছর সংসার চলে মাখনের। কিন্তু এ বার ফুলহারের জলে মাখনের সংসারই ভেসে গিয়েছে। সঙ্গে ভেসে গিয়েছে পুজোর ডালা-কুলো তৈরির সরঞ্জামও! শোওয়ার ঘরে যখন বুক জল, তাই সকলে মিলে আশ্রয় নেন স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে। মালদহের রতুয়ার মহানন্দটোলার সাহানগর এলাকার বাসিন্দা মাখন। তাঁর মতোই সাহানগর ম্যানেজড প্রাথমিক স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গত ২০টি পরিবার। ওই বুথে ভোটারের সংখ্যা ১২৬৮ জন! অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন দূরে আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ বা রাস্তার পাশে। গত এক সপ্তাহে তাঁদের কেউই গরম ভাত চোখে দেখেননি। শুকনো চিড়ে, মুড়ি খেয়েই দিন কাটছে।

মাখনের স্ত্রী প্রতিমা বলেন, নলকূপগুলো জলের তলায়। তাই সকাল হলেই ছুটতে হচ্ছে জলের খোঁজে। পুজোর মুখে এমনই অবস্থা রতুয়া ও হরিশ্চন্দ্রপুরের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষাধিক বাসিন্দার। ফুলহারের জলস্তর দাঁড়িয়েছে ২৮.২৫ মিটারে। যা চরম বিপদসীমা থেকে ৮২ সেন্টিমিটার বেশি।

এ দিন মহানন্দার জলস্তরের সূচক ছিল ২১.৫৮ মিটার। যা বিপদসীমার চেয়ে ৫৮ সেন্টিমিটার বেশি। কিন্তু এমন পরিস্থতি হলেও দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌছয়নি। ফলে দুর্গতরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। পুরসভা জানিয়েছে, ত্রাণের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মালদহের ইংরেজবাজার শহরের পাশ ঘেঁষে চলে গিয়েছে মহানন্দা নদী। এক সপ্তাহ ধরেই ফুঁসছে সেই মহানন্দা।

মহানন্দার পাড়ে বসবাসকারী প্রায় পাঁচশো পরিবারের ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে। উত্তর বালুচর, দক্ষিণ বালুচর, সাহানি পাড়া, সুকান্ত পল্লি, মিশন ঘাট সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের ঘরবাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে। ফলে ওই পরিবারগুলি আসবাব নিয়ে আশ্র‍য় নিয়েছে শহরের বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুল, মাঠ, ধর্মশালায়। অনেকে আবার রাস্তার পাশে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়েছে। সকালে স্ত্রী, পুত্র ও আসবাব নিয়ে বালুচরের একটি প্রাথমিক স্কুলে উঠেছেন রামাশঙ্কর সাহা ও তাঁর প্রতিবেশীরা। রামশঙ্কর বললেন, ‘‘পুজো যে শুরু হয়েছে, তাই তো জানি না। ভাত পাব কি! পুজো কেটে যাবে ত্রাণের খাবারেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Malda Chanchal Flood Situation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy