শিলিগুড়িতে বিজেপির মিছিলে দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও উত্তরবঙ্গের সাংসদেরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের আগে শিলিগুড়িতে নরেন্দ্র মোদীর একাধিক জনসভা থেকে কালিম্পঙে অমিত শাহের সভা, বিভিন্ন সময়ে বিজেপি ডাকা কর্মসূচিতে পাহাড়বাসীর যোগদান বরাবর চোখে পড়ছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে বিজেপির মিছিলে প্রায় যোগই নিলেন না পাহাড়বাসী। হাতে গোনা কিছু মানুষ ছাড়া ঝাঁকে ঝাঁকে গাড়ি নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসার দৃশ্য একটিবারও চোখে পড়েনি।
উত্তরের প্রতিটি জেলা থেকে লোক আনা হয়েছিল বিজেপির এই মিছিলে। মিছিলের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন একেবারেই হাতে গোনা গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষজন। তাঁদের একটি বড় অংশ অবশ্য তরাই ছাড়া আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির।
বিজেপি নেতাদের অন্দরেই দিনের শেষে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি নাগরিকপঞ্জি বা নাগরিকত্ব আইনের প্রতি একেবারেই সমর্থন জানাচ্ছেন না পাহাড়বাসী! বিজেপি বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির মিছিলে যত জন গোর্খা সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দিয়েছিলেন, তার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি পাহাড়বাসীকে শিলিগুড়ি বাজারে, রাস্তা, অফিস নানা কাজে দিনভর দেখা গিয়েছে।’’
সেই জায়গায় গত কয়েক দিন ধরে দু’টি বিষয়ের প্রতিবাদে বিনয়পন্থী মোর্চার পাহাড়ে শুরু হওয়া মিছিল, অবস্থান ধর্নায় মানুষের ভিড় উপচে পড়ছে। বিশেষ করে বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের মিছিল, মিটিঙে উপস্থিতি থাকছে চোখে পড়ার মতো। পাহাড়বাসীদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, ‘‘অসমে এনআরসি-র জেরে লক্ষাধিক গোর্খার নাম তালিকা থেকে বাদ পড়তে, পাহাড়ের অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা কোনও ভাবেই নাগরিকপঞ্জি বা নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে রাস্তায় নেমে গোর্খা সম্প্রদায়ের বড় অংশের বিরুদ্ধে যেতে চাইছেন না। এ দিন মিছিলে গোর্খাদের দেখতে না পাওয়ার কারণ সম্ভবত সেটাই।’’
পাহাড়ের জমায়েত নিয়ে অবশ্য রাখঢাক করেননি বিজেপি নেতারা। রাজ্যের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রথীন বসু বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের পরিস্থিতিটা এখন ঠিক নেই। খুব ঠান্ডাও পড়ে গিয়েছে। আবার পাহাড় বন্ধ ডেকে বসে রয়েছেন একদল। সব মিলিয়ে পাহাড়ের উপস্থিতি তাই কম ছিল।’’
দলীয় সূত্রের খবর, গত সোমবারই দার্জিলিং গিয়েছিলেন সাংসদ রাজু বিস্তা। গত কয়েক দিন ধরে তিনি বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগ করেন। পাহাড় থেকে ১০ হাজার লোক আসতে পারেন বলেও দলের নেতারা হিসাব করেন। কিন্তু কাজের দিন, ব্যবসা, চাকরি, দোকানপাট বন্ধ করে ছোট গাড়ি ভাড়া করে সমতলে নামা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। শেষে ঠিক হয়, এক হাজারের মতো লোক দার্জিলিং, কালিম্পং থেকে আসবেন। কিন্তু আদতে এ দিন এসেছেন হাতেগোনা কিছু সক্রিয় সমর্থক।
বিজেপির একটি অংশ আবার জানাচ্ছে, পাহাড়ে বিজেপির নিজের সংগঠন তেমন কিছুই নেই। জিএনএলএফ এবং বিমলপন্থী মোর্চার ভরসায় বারবার ভোটের নৌকো পার করেছে দল। যদিও পাহাড়ের বিনয়পন্থী মোর্চা নেতাদের দাবি, ‘‘বিজেপির প্রতি মোহভঙ্গ হচ্ছে পাহাড়বাসীর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy