Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
National Green Tribunal

তিস্তায় ‘অবৈধ’ ক্রাশার, তদন্তের নির্দেশ আদালতের

প্রশাসন সূত্রের খবর, সেবক এলাকাটি মহানন্দা অভয়ারণ্যের পাশে রয়েছে। সেখানে জাতীয় পরিবেশ আদালত, কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিয়ম ভেঙে ‘ক্রাশার’টি চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

সেবকের রেলসেতুর পাশে সেই পাথর ভাঙার ক্রাশার পয়েন্ট।

সেবকের রেলসেতুর পাশে সেই পাথর ভাঙার ক্রাশার পয়েন্ট। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৪ ০৮:৫৪
Share: Save:

তিস্তা নদী লাগোয়া সেবক রেলসেতুর পাশে, পাথর ভাঙার কল (ক্রাশার) নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল ‘ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল’ বা জাতীয় পরিবেশ আদালত। মঙ্গলবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে পরিবেশপ্রেমী সুভাষ দত্তের করা মামলার শুনানি হয়েছে। শুনানিতে শুধু তিন জনের কমিটি গড়া নয়, এলাকা পরিদর্শন করে কমিটিকে তিন সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশও দিয়েছে আদালত।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সেবক এলাকাটি মহানন্দা অভয়ারণ্যের পাশে রয়েছে। সেখানে জাতীয় পরিবেশ আদালত, কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নিয়ম ভেঙে ‘ক্রাশার’টি চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তিস্তার একটি শাখা নদীর গতিপথ রুদ্ধ করার অভিযোগও করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ‘ক্রাশার’ তৈরি করা হলেও, এখন সেটি পুরোপুরি বেআইনি ভাবে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগের সমর্থনে সুভাষ দত্ত বিভিন্ন সরকারি নির্দেশ, আদালতের রায় এবং ছবি জমা দেন। সব শোনার পরে, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির দুই জেলাশাসক এবং রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের এক অভিজ্ঞ বিজ্ঞানীকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।

বুধবার দার্জিলিঙের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল বলেছেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ এখনও হাতে পাইনি। তা পেলেই অবশ্য আদালতের নির্দেশ মতো কাজ হবে।’’

আদালতে বলা হয়েছে, ‘ক্রাশার’টি তিস্তা নদী থেকে ২০০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে। পাশেই সেবক রেল-সেতু এবং ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে। অভিযোগ, ‘ক্রাশার’-এ পাথর ভাঙার জেরে, এলাকায় ওড়া ধুলো নিয়ন্ত্রণে জল ছেটানোর কোনও সরঞ্জাম নেই। ট্রাক, ডাম্পারে বোঝাই করার পরে, ভাঙা পাথর ত্রিপল দিয়ে ঢাকা হচ্ছে না। পরিবেশ আইনে বলা আছে, ‘ক্রাশার’-এর ভিতরে দুই-তিন সারি করে গাছ পুঁতে সবুজায়ন করতে হবে। এখনে তা মানা হয়নি।

সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘মহানন্দা অভয়ারণ্য, তিস্তা নদী, পাহাড়ের জাতীয় সড়কের পাশে যে ভাবে আইন ভেঙে ক্রাশারটি চলছে তা মানা যায় না। বেআইনি কাজ শুধু নয়, দূষণ‌ে এলাকা ভরে যাচ্ছে। দ্রুত বন্ধ করা দরকার।’’ তিনি জানান, আগামী ২ সেপ্টেম্বর মামলার চূড়ান্ত নির্দেশ আসবে।

সরকারি সূত্রের খবর, জাতীয় সড়কের সংস্কার থেকে সেবক-রংপো রেল পথের বিভিন্ন কাজের পাথর এই ‘ক্রাশার’ থেকে সরবরাহ হয়েছে। কিন্তু তিস্তার পাশে যে ভাবে সেটি তৈরি হয়েছে, তাতে নদীর স্বাভাবিক চলনে ‘সমস্যা’ তৈরি হয়েছে। আবার এলাকায় তিস্তায় মিলে যাওয়া নন্দী নদীর গতিপথ বন্ধ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

National Green Tribunal Teesta River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE