—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মিডডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে যদি বলি মাথাপিছু বরাদ্দ পর্যাপ্ত, তা হলে সত্যের অপলাপ হবে। রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বেড়েই চলেছে। আনাজ, মশলার সামগ্রী, সরর্ষের তেল— সব কিছুরই দাম বেড়েছে। খরচও বেড়েছে সমান তালে। সেই নিরিখে মাথাপিছু ওই বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রয়োজনের থেকে অনেকটাই কম। খাদ্য-মানের বৃদ্ধি আশা করা গেলেও সেটা কতটা পূরণ হবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। ওই বৃদ্ধির পরেও যদি খাদ্যের মানের সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হয় স্কুলগুলো, তা হলে বৃদ্ধিটা এক রকম ‘ছেলে ভোলানো’ পদক্ষেপ হয়ে চিহ্নিত হবে।
যদিও এই বর্ধিত অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহৃত হলে ছাত্রছাত্রীদের খাবারের কিছুটা শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে এ আশা করাই যায়। সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের বিরাট অংশ আসে গরিব বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। ওদের কাছে স্কুলের পাঠের থেকেও বেশি প্রয়োজনীয় দুপুরের খাবার। অনেক স্কুল আগের নির্ধারিত অর্থেও সপ্তাহে দু’দিন ডিম, এক দিন মাংস-সহ যথেষ্ট উন্নত মানের খাবার খাইয়ে গিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। সব স্কুল ওই মান ছুঁতে পারেনি। তার কারণ অনেকটাই মানসিকতা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব। এটাও দেখা যায়, যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা মিডডে মিলের কাজে যুক্ত থাকেন, তাঁরাও তাঁদের পারিশ্রমিক সময় মতো পান না। এখানেও অর্থের টানাটানিকেই কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, পডুয়াপিছু বরাদ্দ অর্থের কিছুটা বৃদ্ধি (যদিও সেটাও পুরোপুরি যথেষ্ট নয়) এই সমস্যাগুলোকে অনেকটা প্রশমিত করবে, এ আশা রাখা যেতেই পারে।
যে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে সে রকম ভাল মানের খাবার পায় না, তারা স্কুলে এসে যদি একটু ভাল পদ দিয়ে খেতে পারে, সেটা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও একটা পরম তৃপ্তির বিষয়। আর যাঁরা এই মিডডে মিলের রান্নার কাজে নিয়মিত পরিশ্রম করেন, তাঁরাও সেই পরিশ্রমের উপযুক্ত মূল্য সময় মতো পাবেন, সেটাই কাম্য। আর সবের মূলেই যখন অর্থের জোগান, তাই সেই জোগানে বাড়তি জোয়ার, সার্বিক ভাবে মিডডে মিলের ব্যবস্থাকেই উন্নততর করে সরকারি স্কুল থেকে স্কুলছুট কমাবে এবং পড়ুয়া-ভর্তি বাড়িয়ে তুলবে— এই বিশ্বাস রাখি। কিছু অর্থ মিডডে মিল খাওয়ার স্থানটি আরও বেশি স্বাস্থ্যসম্মত করার দিকে ব্যয় করাটাও সঙ্গত হবে। সাবান, হ্যান্ডওয়াশ আবশ্যক হোক। পরিচ্ছন্ন জায়গায় বসে যাতে পড়ুয়ারা খেতে পারে তা দেখা দরকার।
(শিক্ষক, রামভোলা হাইস্কুল, কোচবিহার)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy