আক্রান্ত: আর্সেনিকের প্রভাব দেখা যাচ্ছে হাতে। —নিজস্ব চিত্র
মালদহের আর্সেনিক কবলিত এলাকায় আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের পরিষেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। এর জন্য তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প। সেই প্রকল্পের অনুমোদনও মিলেছে বলে দাবি জেলার জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের (আর্সেনিক) কর্তাদের। সংশ্লিষ্ট দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (আর্সেনিক) রজত সাহা বলেন, ‘‘জেলায় আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জলের চাহিদা বাড়ছে। তাই কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। সেই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মানিকচক, কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের মতো নতুন আরও এলাকার বাসিন্দারা আর্সেনিকমুক্ত পরিষেবা পাবেন। রাজ্যের অনুমোদনও মিলে গিয়েছে। খুব শ্রীঘই সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’
মালদহের জলে রয়েছে আর্সেনিক বিষ। মানিকচকের শেখপুরায় নব্বইয়ের দশকে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ২০ জনের। এখনও গ্রামে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। কালিয়াচকের নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতের দরিয়াপুরেও কিছু আর্সেনিকে আক্রান্ত রোগী আছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলার পাঁচটি ব্লকে জলের নমুনা পরীক্ষা করে আর্সেনিক মিলেছে। কালিয়াচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর, এবং ইংরেজবাজারের শোভানগর, বিনোদপুর, যদুপুর-সহ একাংশ পঞ্চায়েতে আর্সেনিকের খোঁজ পেয়েছে প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, আর্সেনিক থেকে ছড়ানো রোগে আক্রান্তদের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। এক কর্তা বলেন, ‘‘হাত-পায়ের তালুতে কালো দাগ দেখা যায়। গায়ের চামড়া মোটা হয়ে যায়। আর্সেনিকের ফলে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই আর্সেনিকের লক্ষণ দেখা দিলে শুরু থেকেই চিকিৎসা করাতে হয়।’’ জেলার মু্খ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহাজান নিজাম বলেন, ‘‘মালদহ মেডিক্যাল তো বটেই, অন্য গ্রামীণ হাসপাতালেও আর্সেনিক আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়। চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞরাই এই চিকিৎসা করেন। রোগীদেরও সতর্ক থাকতে হবে। পরিশ্রুত পানীয় জল খাওয়া, স্বচ্ছ জলে স্নান জরুরি।’’
মানিকচকে আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের প্ল্যান্ট রয়েছে। ফুলহার থেকে নদীর জল তুলে তা পরিশোধিত করা হয়। পাইপের মাধ্যমে তা জেলার পাঁচটি ব্লকে সরবরাহ করা হয়। তবে বহু মানুষের দাবি, নিয়মিত আর্সেনিকমুক্ত পানীয় জল মেলে না। আরও অভিযোগ, আর্সেনিক কবলিত এলাকাতেই নেই পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। মানিকচকের শেখপুর, শঙ্কর টোলা-সহ মোট ১৫টি গ্রামে নেই পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাস্তার পাইপ ফুটো করে বিভিন্ন এলাকায় জল সংগ্রহ করা হয়। ফলে সেই অংশ দিয়ে জল অপচয় হয়। ফলে বিভিন্ন এলাকায় জল পৌঁছাতে সমস্যা হয়। তবে এখন সেই অংশ গুলো মেরামতের কাজ চলছে।’’ নতুন প্রকল্প চালু হলে জলের গতি বেড়ে যাবে এবং নতুন নতুন গ্রামে আর্সেনিকমুক্ত জলও পৌঁছবে বলে দাবি তাঁর। জেলায় জলাধারও তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy