শুধু বোর্ডের অনুমোদন পেলেই হবে না। এ বার থেকে যে কোনও প্রকল্পের কাজ শুরু করতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের ছাড়পত্রও চাই।
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) গাইডলাইনে এমন কোনও শর্ত আগে ছিল না। নতুন করেও সংযোজন করা হয়নি। তবে সংস্থার নয়া চেয়ারম্যানের নির্দেশেই এমন ব্যবস্থা লাগু। এই নির্দেশ মেনেই বোর্ড মিটিঙে অনুমোদন হয়ে যাওয়া যাবতীয় প্রকল্পের খুঁটিনাটি বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করে পাঠানো হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে। প্রকল্পের ব্যয় কত, ক’টি পর্যায়ে কাজ হবে সবই জানানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাঠিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ‘পরামর্শ’ চাইছে সংস্থা। তারপরেই কাজ শুরু। আপাতত বেশ কিছু বাস শেড থেকে শুরু করে অতিথিনিবাস তৈরির প্রকল্প পাঠানো হয়েছে নবান্নে।
সংস্থার চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব ভাবনা রয়েছে। তাঁর পরামর্শ পেলে প্রকল্পগুলি নানা দিক থেকে সমৃদ্ধ হতে পারবে। সে কারণেই ছোট-বড় যে প্রকল্পই হোক না কেন, সবই নবান্নে পাঠানো হচ্ছে।’’
এই সিদ্ধান্তের পেছনে এসজেডিএ-এর অতীতের দুর্নীতির ছায়া রয়েছে বলে দাবি। রাজ্যে তৃণমূল সরকার গঠন হওয়ার পরের বছরেই এসজেডিএ-এর কাজকর্মে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম সহ প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপে একশো কোটিরও বেশি টাকা সংস্থার কোষাগার থেকে অবৈধ ভাবে পাইয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুর্নীতি সামনে আসতে সরিয়ে দেওয়া হয় তৎকালীন চেয়ারম্যানকে। পরবর্তীতে সংস্থার প্রাক্তন সিইও গোদালা কিরণ কুমার সহ ইঞ্জিনিয়র, ঠিকাদাররা গ্রেফতার হন। তৃণমূল দ্বিতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রথমবারের বিধায়ক, আলিপুরদুয়ার থেকে নির্বাচিত সৌরভ চক্রবর্তীকে। এখনও পর্যন্ত সংস্থার বোর্ডে কোনও জনপ্রতিনিধির স্থান হয়নি, আমলাদের দিয়ে বোর্ড চালানো হচ্ছে। সব পদক্ষেপই সংস্থার কাজকর্মে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।
টেন্ডারের মাধ্যমে সংস্থা বাছাই প্রক্রিয়াতেও সম্প্রতি কিছু বিধিনিষেধ আনা হয়েছে। টেন্ডারে অংশ নেওয়া বিভিন্ন ঠিকাদারি সংস্থায় একই ব্যক্তির উপস্থিতি বা যোগাযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট সবকটি সংস্থাকেই বাতিল করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। নাম বদল করে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি সংস্থা টেন্ডারে অংশ নেওয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে এই নির্দেশ বলে দাবি। সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রবণতা শুরু হয় প্রকল্প শুরুর একেবারে গোড়া থেকেই। সে কারণেই টেন্ডার এবং প্রকল্পের অনুমোদন নিয়ে চেয়ারম্যান কড়াকড়ির নির্দেশ দিয়েছেন।
অতীতের দুর্নীতির খেসারতও এখনও বইতে হচ্ছে সংস্থাকে। কয়েক কোটি টাকার সরঞ্জাম এখনও অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলির সরবারহকারী সংস্থাগুলির কাজকর্ম নিয়েও অভিযোগ উঠেছিল। তবে সরঞ্জাম ব্যবহার করতে বাধা নেই বলে দাবি করেছেন অনেকেই। যদিও তা নিয়েও ঝুঁকি নিতে রাজি নন কর্তৃপক্ষ। তা নিয়েই নবান্নের কাছে নির্দেশ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থা।
বিধি অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও স্বনির্ভর হলেও স্বচ্ছতা বজায় রাখতে আপাতত নবান্নের ‘পরামর্শে’ই চলতে চাইছে এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy