Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

লকডাউন: কেন্দ্রকে সাংসদের আর্জি, নবান্নে রিপোর্ট জেলার

শিলিগুড়ি শহরকে সম্পূর্ণ লকডাউনে না এনেও যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে, তা রুখতে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা ওয়ার্ডগুলিতে লকডাউন করার অনুমতি চেয়ে পরিস্থিতি জানিয়ে নবান্নে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

আনন্দের ফুল: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

আনন্দের ফুল: হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে অশোক ভট্টাচার্য। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২০ ০৭:০১
Share: Save:

শিলিগুড়িকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লকডাউনের আর্জি জানানোর পর এ বার এই শহরকে রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ চাইতে চলেছেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের তরফে শিলিগুড়ি শহরকে সম্পূর্ণ লকডাউনে না এনেও যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে, তা রুখতে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা ওয়ার্ডগুলিতে লকডাউন করার অনুমতি চেয়ে পরিস্থিতি জানিয়ে নবান্নে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

সাংসদ সোমবার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি লিখিত ভাবে জানাচ্ছি, যাতে কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে।’’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় দল পাঠাতেও অনুরোধ করবেন বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি দেব এবং কথা বলব। কেন দার্জিলিং জেলায় তথা শিলিগুড়িতে করোনা সংক্রমণ কেন এ ভাবে বাড়ছে, তা খোঁজ করে দেখতে হবে। কী ভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় করা যাবে, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে আর্জি জানাব।’’

এর আগেও উত্তরবঙ্গে যে কেন্দ্রীয় দল এসেছিল, পাহাড় ও সমতল ঘুরে তাদের পর্যবেক্ষণ ছিল, শিলিগুড়িতে কনটেনমেন্ট জ়োনে ঠিক মতো বিধি নিষেধ মানা হচ্ছে না। শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার-সহ কয়েকটি বাজারে গাড়ি জীবাণুমুক্ত করা, মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রেই হচ্ছে না। লকডাউনেও যে ভাবে মানুষ ঘোরাফেরা করছে, তা নিয়ে দলটি উদ্বেগ প্রকাশ করে। সংক্রমণের এগুলিই বড় কারণ বলে চিকিৎসকদের একাংশের মত। বর্তমানে শিলিগুড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছুঁইছুঁই। মৃতের সংখ্যাও প্রায় রোজই বাড়ছে।

পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে সম্প্রতি বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গে করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়। তিনি জানিয়েছিলেন, সম্পূর্ণ লকডাউনের কথা ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা এখনই লকডাউনে না গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কনটেনমেন্ট জ়োন করে করোনা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার কথা জানান। কিন্তু শহরের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ মনে করছেন, শুধু কনটেনমেন্ট জ়োন করে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। তার জন্য দরকার পূর্ণ বা এলাকাভিত্তিক লকডাউন। বাজারগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে ভিডি়য়ো কনফারেন্সে ছিলেন দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের কর্তারা। সেখানে তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছেন, ওয়ার্ড ধরে ধরে কি সাময়িক লকডাউন করা সম্ভব? একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন থেকে এই আর্জি জানিয়ে নবান্নকে চিঠিও পাঠানো হয়ছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে সুশান্তবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যকে সত্যিকারের সাহায্য করার মানসিকতা নিয়ে যদি কেন্দ্র বিশেষজ্ঞদল পাঠালে তো ভাল। তা না হলেই সমস্যা দেখা দেয়।’’

শিলিগুড়ির ৪৬, ২৮, ১৮ নম্বরের মতো বেশ কিছু ওয়ার্ডে সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে তাতে ওই এলাকাগুলিতে পূর্ণ লকডাউনের কথা ভাবা উচিত বলে চিকিৎসকদের একাংশের মত। প্রশাসনের তরফে শহরের বেশ কিছু বাজার বন্ধ রাখা হয়েছে। ১৪ দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার এবং চম্পাসারি বাজার। তবে লাগোয়া ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে তাতেও সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি। তাই এলাকাভিত্তিক পূর্ণ লকডাউন জরুরি, বলছে প্রশাসনের একাংশও।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19 Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy