দৃষ্টি: এ ভাবেই মানঝা নদীর পাড় থেকে জল তুলে খেতে হয় গ্রামের লোকজনকে। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামে বেশিরভাগ নলকূপই বিকল। কোথাও দু’একটি কুয়ো শুকিয়ে গিয়েছে। নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ মুখ থুবড়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ ভাবেই দিন কাটছে শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি ব্লকের প্রয়াত নকশাল নেতা কানু সান্যালের স্মৃতি-বিজড়িত সেবদৌল্লাজোতের। বাধ্য হয়ে নদীর পাশে গর্ত খুঁড়ে সেই জমা জলই খাচ্ছেন বাসিন্দারা। অনেক সময়েই সেই জল খেয়ে রোগে ভুগছেন। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
শিলিগুড়ি থেকে ৩১ কিলোমিটার দূরে হাতিঘিসা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন গ্রামটি। ২০১৪ সালে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম আর্দশ গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দফতরে পৌঁছেছিল। সেবদৌল্লাজোতে গিয়ে সেই সময়কার দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া হাতিঘিসাকে দত্তক নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। স্বপ্ন দেখেছিল সেখানকার দরিদ্র পরিবারগুলি।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পাশ দিয়ে বয়ে চলা মানঝা নদীর জলই প্রধান ভরসা। নদীর জলে পলি জমলে পাশে খুঁড়ে রাখা গর্তের জল খান। অভিযোগ, তাতে অনেকে অসুখে ভুগছেন। গত সপ্তাহে পূর্ব সেবদৌল্লার দু’জন অসুস্থ হয়ে নকশালবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের জ্বর, বমিও হয়েছিল বলে দাবি।
অধিকাংশই অভাবী পরিবার। অনেকে ভিন রাজ্যে কাজে যান। অল্প বয়সে স্কুল ছেড়ে সংসার চালাতে অনেকে কাজে যোগ দিচ্ছেন বলে দাবি। সেরকম বছর ত্রিশের ছোটন মুন্ডা বলেন, ‘‘এখনও আমাদের নদীর জল খেয়ে কেন থাকতে হবে বুঝি না।’’ প্রিয়া মুন্ডা জানান, ২০১৮ সালে ‘মডেল গ্রাম’ হয়েছে শুনে ভেবেছিলেন সব সমস্যা মিটে যাবে। দু’একটি এলাকায় নলবাহিত জলের ব্যবস্থা হলেও কিছুদিনের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। প্রিয়া বলেন, ‘‘প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনেক জানিয়েও কাজ হয়নি। আমরা মানঝার পাড়ে গর্ত খুঁড়েও খাওয়ার জল নেই।’’
অভিযোগ, ভোটের সময় নেতারা পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। ভোট ফুরোলে আর কাজ হয় না। কয়েক মাসের মধ্যে মহকুমা পরিষদ ভোট হওয়ার কথা। তার আগে সমস্যা সমাধান হয় কিনা তাকিয়ে বাসিন্দারা।
মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক তথা শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতার অভাব। সে সময় সাংসদ এলাকার উন্নয়নে কিছু প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ হলেও কাজ হয়নি।’’ নকশালবাড়ির বিডিও অরিন্দম মণ্ডল বলেন, কেন নলবাহিত জল বন্ধ, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘দত্তক নিয়ে গ্রামটিকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। আমরা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy