Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

ছিনতাই রুখে শুরু গণপ্রহার

তখন দুপুর পৌনে দু’টো। জমজমাট কদমতলা। হঠাৎই ‘চোর’, ‘টাকা নিয়ে পালাচ্ছে’ চিৎকারে পথচারীরা থমকে দাঁড়ান।

জনরোষ: মারধর করা হচ্ছে অভিযুক্তকে। শুক্রবার জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

জনরোষ: মারধর করা হচ্ছে অভিযুক্তকে। শুক্রবার জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

বিধানসভায় শুক্রবারই বিল পাশ হল যে, গণপিটুনির শাস্তি যাবজ্জীবন বা প্রাণদণ্ডও হতে পারে। এ দিনই ভরদুপুরে জলপাইগুড়ির প্রাণকেন্দ্রে গণপ্রহারের শিকার হলেন এক প্রৌঢ়।

তখন দুপুর পৌনে দু’টো। জমজমাট কদমতলা। হঠাৎই ‘চোর’, ‘টাকা নিয়ে পালাচ্ছে’ চিৎকারে পথচারীরা থমকে দাঁড়ান। দেখা যায়, এক বাইক সওয়ারকে তাড়া করেছে এক যুবক। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই যুবক হেলমেট পরা বাইক আরোহীকে জাপটে ধরে ফেলেন। যুবকের চিৎকার শুনে বাইক আরোহীকে ঘিরে ধরেন পথচারীরাও। যুবকটি দাবি করেন, তার বাইকে লাগানো বাক্স ভেঙে টাকা লুঠ করে পালাচ্ছিলেন ওই বাইক আরোহী।

অভিযোগ, যুবকের দেওয়া বিবরণ মতো নোটের বান্ডিল উদ্ধার হয় বাইক আরোহীর জামার ভিতর থেকে। উদ্ধার হয় নব্বুই হাজার টাকা। তাঁর হেফাজত থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি। তার পরেই শুরু হয়ে যায় গণপিটুনি।

বাইক আরোহীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পথচারীদের কয়েক জন চড়-থাপ্পর মারে অভিযুক্তকে। পুজোর আগে জলপাইগুড়ি শহরে ভরদুপুরে ছিনতাইয়ের এমন অভিযোগে আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে।

কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আইন পথচারীরা নিজের হাতে তুলে নিলেন কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। দাবি করা হয়েছে, যদি শহরের মধ্যেই এমন কাণ্ড ঘটে, তা হলে পুলিশ-প্রশাসন কী নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে?

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম দেবানন্দ সিংহ। বাড়ি বিহারে। ধৃতের থেকে একটি বন্দুক, দুই রাউন্ড গুলি, এক গুচ্ছ চাবি ও হরিয়ানার একটি মোটর বাইক উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুরে একটি ব্যাঙ্কের কদমতলা শাখায় টাকা তুলতে গিয়েছিলেন শহরেরই বাসিন্দা জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। পেশায় ঠিকাদার জয়দীপকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে এসে বাইকের বাক্সে রেখেছিলেন। সে সময় থেকেই অভিযুক্ত পিছু নেন বলে দাবি। ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে কয়েকশো মিটারের মধ্যে একটি বাড়িতে ঢুকেছিলেন জয়দীপ। বাইক রাস্তার পাশে দাঁড় করানো ছিল। জয়দীপ জানান, হঠাৎই একটি শব্দ পেয়ে বাইরে এসে দেখেন বাইকে লাগানো বাক্সের তালা ভাঙা। রাস্তায় থাকা আরেক বাইক আরোহীর সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে যায় জয়দীপের। জয়দীপ বলেন, “আমি বুঝতে পারি হেলমেট পরা ওই বাইক চালক আমাকে দেখে হকচকিয়ে গিয়েছে এবং পালাতে চেষ্টা করছে। সঙ্গে সঙ্গে ওকে ধরতে আমি দৌড় শুরু করি, চিৎকারও করতে থাকি।” জয়দীপের সাহসের প্রশংসা করেছে পুলিশ থেকে পথচারী। প্রত্যক্ষদর্শী উত্তম দাস বলেন, ‘‘যাঁর টাকা চুরি হয়েছে তিনি যদি দৌড়ে গিয়ে না ধরতেন, তবে ছিনতাইকারী পালিয়ে যেতেন। নিজের বুদ্ধির জোরেই টাকা রক্ষা করতে পেরেছে।’’ তবে অভিযুক্তের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তাই বিপদের ভয়ও কম ছিল না। আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, সব ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mob Lynching Miscreant Jalpaiguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy