Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

উদ্বোধনে আছেন, পুজো আয়োজনে নেই মন্ত্রীরা

উদ্বোধনে আছি, আয়োজনে নেই। এটাই যেন দুর্গাপুজোয় উত্তরবঙ্গের মন্ত্রীদের মন্ত্র। কলকাতার একাধিক পুজোই রাজ্য সরকারের নানা মন্ত্রীদের পুজো বলে পরিচিত। উত্তরবঙ্গে অবশ্য ছবিটা অন্য।

আজ মহাষষ্ঠী। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের পরে ধূপগুড়ির নবজীবন সঙ্ঘের প্রতিমা। ছবি: রাজকুমার মোদক।

আজ মহাষষ্ঠী। বৃহস্পতিবার উদ্বোধনের পরে ধূপগুড়ির নবজীবন সঙ্ঘের প্রতিমা। ছবি: রাজকুমার মোদক।

গৌর আচার্য ও অরিন্দম সাহা
রায়গঞ্জ ও কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৬
Share: Save:

উদ্বোধনে আছি, আয়োজনে নেই। এটাই যেন দুর্গাপুজোয় উত্তরবঙ্গের মন্ত্রীদের মন্ত্র। কলকাতার একাধিক পুজোই রাজ্য সরকারের নানা মন্ত্রীদের পুজো বলে পরিচিত। উত্তরবঙ্গে অবশ্য ছবিটা অন্য।

বাজেট থেকে শুরু করে থিম - পুজোর আয়োজনে কিন্তু উত্তরবঙ্গের নেতা-মন্ত্রীদের সিংহভাগই এখনও মেপে পা ফেলেন। ৭ জেলায় ৬ মন্ত্রীর গতিবিধি দেখলেই মালুম হয় তা। এঁদের একজনও সরাসরি কোনও পুজোর সঙ্গে জড়িত নন। তবে নিজের নিজের এলাকায় উদ্বোধনে আছেন প্রত্যেকেই। সব থেকে বেশি ডাক পড়ছে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। আসরে যে কোনও নেতাই নেই এমনটা নয়। আছেন উত্তর দিনাজপুরের দুই ডাকসাইটে নেতা কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত ও ইটাহারের তৃণমূল বিধায়ক অমল আচার্য। এঁদের সঙ্গেই পাল্লা দিচ্ছেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা গৌতম পাল। এই তিনজনই সরাসরি পুজোর সঙ্গে যুক্ত।

মণ্ডপ থেকে আলোকসজ্জা এমনকী প্রতিমা, সবকিছুতেই একে অপরকে টেক্কা দিতে আসরে নেমে পড়েছেন ওই তিন নেতার অনুগামীরা।

ইটাহারের চৌরাস্তা মোড়ে ‘উল্কা’ ক্লাবের সম্পাদক ও উপদেষ্টা অমলবাবু। প্রায় ১২ লক্ষ টাকা বাজেটে দিল্লির বিষ্ণুমন্দিরের আদলে হোগলাপাতার মণ্ডপ, এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চন্দননগরের ডিজিটাল আলো ও কাটোয়ার কুমোরটুলির সাবেকি প্রতিমার আয়োজন করে গৌতমবাবু ও মোহিতবাবুর পুজোকে টেক্কা দিতে আসরে নেমে পড়েছেন অমলবাবু।

গৌতমবাবুর পুজোর নাম করণদিঘি ব্লক সর্বজনীন। ২৫ লক্ষ টাকা বাজেটে সিকিমের নামচি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ, কাটোয়ার ডিজিটাল আলো ও পাহাড়ের মূর্তির আদলে প্রতিমার আয়োজন করে চমক দিয়েছে ওই পুজো কমিটি।

মোহিতবাবুর ক্লাবের নাম ‘বিদ্রোহী’। তিনি নিজে ক্লাবের সম্পাদক। এ বার প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বাজেটে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে প্লাইউড ও থার্মোকলের মণ্ডপ তৈরি করেছে বিদ্রোহী। কৃষ্ণনগরের কুমোরটুলির ডাকের সাজে সাবেকি প্রতিমা ও এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চন্দননগরের ডিজিটাল আলোকসজ্জা দর্শনার্থীদের নজর কাড়বে বলে দাবি পুজোকমিটির সদস্যদের। অমলবাবু ও গৌতমবাবুর দাবি, তাঁরা জেলাবাসীকে সেরা পুজো উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এখানে প্রতিযোগিতার কোনও প্রশ্ন নেই।

কোচবিহারে দু’টি পুজোর আয়োজনের সঙ্গে দুই নেতার নাম জড়়িয়ে রয়েছে। কোচবিহার শহরের লীলা স্মৃতি ভবানী মন্দিরের পুজোর প্রধান উপদেষ্টা তৃণমূল কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডু। শহর থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জের ওই পুজো কমিটির অন্যতম হলেন প্রাক্তন খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী ও ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সভাপতি পরেশ অধিকারী।

উদ্যোক্তারা জানান, এ বছর লীলা স্মৃতি ভবানী মন্দির দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর ৬৮ বছর। একসময় পুজো আয়োজনের মুখ্য কান্ডারী ছিলেন প্রয়াত পুরসভা চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডু। তাঁর মৃত্যুর পর পুজোর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁর পুত্র তৃণমূল কাউন্সিলর শুভজিৎ।

মেখলিগঞ্জের পশ্চিমপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো অনেকের কাছে পরেশ অধিকারীর পুজো বলে পরিচিত। এ বার ওই পুজোর ১১ তম বর্ষ। পুজোর জাঁকজমক আগের থেকে খানিকটা কমেছে। পরেশবাবু বলেন, “সকলের সমান সহযোগিতাতেই প্রতি বছর ওই পুজো করা হচ্ছে।” বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, ক্ষমতা বদলের জেরে প্রভাব কমায় বাজেটও কমেছে। পরেশবাবু অবশ্য তা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, পাটের দাম নেই। গ্রামীণ অর্থনীতির মন্দা। সব মিলিয়েই পুজোর বাজেট কমেছে।

ডুয়ার্সের একমাত্র আলিপুরদুয়ারেই তৃণমূলের এক নেতা সরাসরি আসরে নেমেছেন। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সমর ভট্টাচার্য। সমরবাবুর ক্লাব পশ্চিম ইটখোলা উদয় মন্দির ক্লাবের এ বছর ঢাক ও কুলো দিয়ে তৈরি করছে মণ্ডপ। কমিটির সম্পাদক সমরবাবু জানান, থিম পুজো করা হয়ে অনেক বছর ধরেই। এতে বিশেষ করে শিশুরা মজা পায় আনন্দ করে।

(সহ প্রতিবেদন: আলিপুরদুয়ার থেকে নারায়ণ দে)

অন্য বিষয়গুলি:

Ministers North bengal puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy