বিদ্রোহী: শনিবার সাংবাদিকদের সামনে মিহির গোস্বামী। নিজস্ব চিত্র।
দলের ব্লক ও জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কার্যত ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করলেন কোচবিহারের বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। শুক্রবার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ওই কমিটি ঘোষণা করেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ক্ষোভ উগরে দেন মিহির। দলের সমস্ত সাংগঠনিক পদ থেকে নিজেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথাও জানান। দলনেত্রীর নির্দেশ পেলে কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক পদ ছাড়তেও তিনি দ্বিধা করবেন না বলেও জানান তিনি। জেলার অন্যতম প্রবীণ নেতার এমন ‘বিদ্রোহে’ দলে শোরগোল পড়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এতে সাংগঠনিক কমিটি গঠন নিয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে এসে গেল। ঘটনার জল বহু দূর গড়াতে পারে। কারণ কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে অন্য এলাকাতেও।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মিহির বলেন, “জেলা সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয়েছে, দলীয় অনুশাসন অনুযায়ী সাংগঠনিক বিষয়ে বিধায়কদের প্রস্তাব মেনে নেওয়ার কথা মুখে বলা হলেও বাস্তবে তা লঙ্ঘন করা হয়েছে। কেবল ব্লক সভাপতিদের ক্ষেত্রেই নয়, জেলা কমিটি নিয়েও বিধায়কদের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা হয়নি।” তাঁর সংযোজন, “আমার বিধানসভার ক্ষেত্রে বলতে পারি, মূল সংগঠক অর্থাৎ বিধায়কের প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেছেন জেলা নেতৃত্ব।” তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সভাপতিকে তাঁর প্রস্তাবের কথা জানানো হলেও ফল হয়নি। পরে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়েছে, আজকের এই দলে আমার মতো মানুষ একেবারেই উপযুক্ত নয়।” তাঁর বক্তব্য, “আমার দল তৃণমূল কংগ্রেসের যাবতীয় সাংগঠনিক দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে আজ থেকে নিজেকে অব্যাহতি দিলাম।” দলের ভিতরে অবহেলা, অবমাননা থেকে দলীয় অনুশাসন, শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে। যাঁরা একসময় দল-বিরোধী কাজ করেছেন, তাঁরাই ব্লক সংগঠনের পদে রয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর। তবে দলবদলের কথা ভাবেননি বলেও জানান মিহির।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “ব্লক, জেলা কমিটি দলনেত্রীর অনুমোদন নিয়েই গঠন করা হয়েছে।” মিহিরবাবুর তোলা অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “মিহিরবাবু প্রবীণ নেতা, আমাদের অভিভাবক। উনি কী বলেছেন তা নিজে না জেনে, আপনাদের মুখে শুনে মন্তব্য করব না।” দলীয় সূত্রের খবর, ‘বিদ্রোহের’ আঁচে সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেন জেলা নেতৃত্ব। টিম পিকের প্রতিনিধিরাও ময়দানে নামেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “বিধানসভার আগে তৃণমূল ভেঙে পড়বে। যে কেউ এখন আমাদের দলে এলে স্বাগত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy