Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Malda Incident

মালদহে সালিশি সভাতেই চার ভাইকে বেধড়ক মার! পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির কাছে হামলা ছুরি, রড দিয়ে

মালদহে পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে ঠিকাদারের টাকা নিয়ে বচসায় রক্তারক্তি। সালিশি সভা ডেকে সেই ঝামেলা মেটাতে চেয়েছিলেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। সেখানেই শ্রমিক এবং তাঁর ভাইদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

সালিশি সভায় মারধরের পর জখম পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁর ভাই।

সালিশি সভায় মারধরের পর জখম পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁর ভাই। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ১০:১৩
Share: Save:

মালদহে সালিশি সভা ডেকে চার ভাইকে মারধরের অভিযোগ উঠল ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির সামনেই ওই ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। এমনকি, সভা ডেকেছিলেন প্রধানের স্বামী। ঘটনায় চার জন গুরুতর জখম হয়েছেন। হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। অভিযোগ, লোহার রড, ছুরি, হাঁসুয়া দিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছিল। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত।

ঘটনাটি হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের মালিওর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের হরকাবাথান এলাকার। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরিযায়ী শ্রমিক আকবর আলি সেখানকার শ্রমিক সরবরাহকারী ঠিকাদার মনিরুল ইসলামের কাছ থেকে কয়েক মাস আগে টাকা ধার নিয়ে মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন কাজের জন্য। কিন্তু সেই কাজ তিনি সম্পূর্ণ না করেই চলে আসেন। ধারের টাকা আদায়কে কেন্দ্র করে মনিরুলের সঙ্গে আকবরের গোলমাল অনেক দিনের। তা মেটাতেই সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল বলে খবর। আকবরের অভিযোগ, গত সোমবার মনিরুল তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে মোবাইল এবং ১০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশে তা নিয়ে অভিযোগও জানান আকবর। বৃহস্পতিবার বসে সভা।

আকবরের সঙ্গে তাঁর তিন ভাই সভায় গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সভা চলাকালীন মনিরুল এবং তাঁর সঙ্গীরা আচমকা চার ভাইয়ের উপর চড়াও হন। ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয় তাঁদের। সঙ্গে লাঠি দিয়েও আঘাত করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

আকবর বলেন, ‘‘আমার কাছে কিছু টাকা ওরা পেত। আমি কাজ নিয়ে আট মাস আগে মুম্বই গিয়েছিলাম। কিন্তু সেই কাজ শেষ করতে পারিনি। কিছু দিন আগে মনিরুল আমার কাছে এসে বলেছিল, পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে টাকা দাও। দিইনি বলে মোবাইল কেড়ে নিল। মারধর করল। সেই ঝামেলা মেটাতে সালিশি সভায় গিয়েছিলাম। প্রধান সভা ডেকেছিলেন। দু’পক্ষই সভায় ছিল। সবার কথা শোনা হল। হঠাৎ আমাদের চার ভাইকে মারধর করা হল। চাকু, বন্দুকের নলের বাড়ি মারা হয় মাথায়।’’

জখম আরও এক যুবক বলেন, ‘‘প্রধান সভা ডেকেছিলেন। সেখানে আমাদের সবাই মিলে মারধর করল। পালানোর কোনও পথ ছিল না। আমার মাথায় চাকু মেরেছে। ১০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটাও এখন আর নেই। মনিরুলের কাকা, বাবা ভাই সবাই মিলে মেরেছে। মারবে বলে ঠিক করেই এসেছিল ওরা।’’

পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী আব্দুল রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘গ্রামের মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে গন্ডগোল ছিল। মেটানোর জন্য আমার বাড়িতে ডেকেছিলাম। তার পর আর খোঁজ নিইনি। শুনলাম মারধর করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ হয়েছে।’’

চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ওই ঘটনায় জড়িতদের খোঁজ চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Malda Kangaroo Court TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE