Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বন্ধ জন আহার, ভুয়ো নামে ব্যবসা কিন্তু চলছেই

বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জন-আহার। কেন চালুর কিছু দিনের মধ্যেই কাউন্টারটি বন্ধ হল, তা স্পষ্ট করে বলতে চাইছেন না রেলের পদস্থ আধিকরিকরা।

এনজেপি স্টেশনে বন্ধ আইআরসিটিসির জন আহার কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র

এনজেপি স্টেশনে বন্ধ আইআরসিটিসির জন আহার কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০৫:০৯
Share: Save:

এনজেপি স্টেশনে দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে আইআরসিটিসির জন আহার কাউন্টার। অভিযোগ, সেই সুযোগে আইআরসিটিসি নির্ধারিত রংয়ের পোশাক পরে নিজেদের রেলের লোক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ট্রেনে খাবার বিক্রি করছে একটি চক্র। সূত্রের খবর, এনজেপি থেকেই সরবরাহ হচ্ছে সেই খাবার। স্টেশনের বাইরে একটি হোটেল থেকেই প্যাকেট হচ্ছে সেগুলি। খাবারের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। নিউ কোচবিহার থেকে কিসানগঞ্জ পর্যন্ত সক্রিয় চক্রটি। মূলত দক্ষিণ ভারতগামী ট্রেনগুলিকেই নিশানা করেছেন চক্রের কারবারিরা। আরপিএফ, জিআরপি এবং রেল কর্তাদের নজর এড়িয়ে কী ভাবে দীর্ঘদিন থেকে চলছে ওই কারবার চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীদের অনেকেই। জয়ন্ত সাহা নামে কোচবিহারের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে শিয়ালদহ যাওয়ার সময় এক জন জন-আহারের কর্মী পরিচয় দিয়ে খাবারের অর্ডার নিয়েছিলেন। এনজেপিতে খাবারও দেন। রাতে খেতে গিয়ে দেখি তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। ফেরার সময় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, এনজেপিতে জন-আহারের কাউন্টার দীর্ঘদিন বন্ধ।’’

বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে জন-আহার। কেন চালুর কিছু দিনের মধ্যেই কাউন্টারটি বন্ধ হল, তা স্পষ্ট করে বলতে চাইছেন না রেলের পদস্থ আধিকরিকরা। যদিও এক আধিকারিক জানিয়েছেন, টেন্ডারের মাধ্যমে জন আহার চালানোর জন্য কোনও সংস্থা আগ্রহ না দেখানোয় কাউন্টারটি খোলা যাচ্ছে না। রেল কর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনে খাবার সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স থাকা জরুরি। সূত্রের খবর, এনজেপি সংলগ্ন রাজাহোলি বস্তির কয়েক জন বেআইনিভাবে খাবার সরবরাহের কারবার চালানোর প্রধান মাথা। জনা পঞ্চাশেক লোক গোটা কারবারের সঙ্গে যুক্ত আছে। নিউ কোচবিহার থেকে কিসানগঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে তাঁরা ট্রেনে উঠে খাবারের অর্ডার নেন এবং যাত্রীদের জানিয়ে দেন, এনজেপিতে খাবার দেওয়া হবে। এনজেপি যে হেতু উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় স্টেশন, তাই সেখানে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সংস্থাগুলির কাউন্টার আছে বলেই ভেবে নেয় যাত্রীরা। প্যান্ট্রি কার বা অন্য অন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত খাবার সরবরাহকারী সংস্থার কর্মীদের অনুকরণে কারবারিরা পরিচয়পত্রও তৈরি করে গলায় ঝুলিয়ে ট্রেনের কামরায় কামরায় ঘোরেন বলেই জানিয়েছেন অনেক যাত্রী।

এনজেপির এক প্রভাবশালী নেতা কারবারে মদত দিচ্ছে বলেই অভিযোগ। ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, সেই কারণেই কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। দক্ষিণ ভারতগামী একটি ট্রেনের প্যান্ট্রি কার ম্যানেজার বলেন, ‘‘আমরা একবার রেলের কর্তাদের অভিযোগ জানিয়েছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও হয়েছিল। তার পর থেকে বেশ কিছু দিন ট্রেন এনজেপিতে এলেই ওরা আমাদের কর্মীদের শারিরীকভাবে হেনস্থা করত। ভয়ে আমরা আর কিছু বলিনি।’’

রেলের কাটিহার বিভাগের এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘জন-আহার খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাত্রীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ভুয়ো খাবার সরবরাহকারীদের ধরার চেষ্টা করা হবে। তবে ওই বিষয়ে যাত্রীদেরও সচেতন থাকতে হবে। সন্দেহ হলে তাদের ভিডিয়ো বা ছবি দিয়ে আমাদের জানালেও আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

IRCTC NJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy