চলছে হকার উচ্ছেদ। নিজস্ব চিত্র।
কেউ ১০ বছর তো কেউ ১৫ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছেন। এত দিন ধরে দোকান চালাতে তাঁদের প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা গুনতেও হয়েছে বলে দাবি! হঠাৎ সরকারি সিদ্ধান্তে দোকান ভাঙা পড়ায় এখন মাথায় হাত সেই হকারদের। তাঁদের প্রশ্ন, যত দিন না দোকান পাতার জন্য নতুন জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন, তত দিন সংসার চলবে কী ভাবে?
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তার জেরে মঙ্গলের পর বুধবারেও ফুটপাথ ‘জবরদখলমুক্ত’ করতে ময়দানে নেমেছে প্রশাসন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে অবৈধ ভাবে সরকারি জমি ‘দখল’ করে থাকা ব্যবসায়ীদের দোকান সরানোর নির্দেশ দেয় পুলিশ। শিলিগুড়ির মাটিগাড়া এলাকায় একটি শপিং মলের সামনে ফুটপাত ‘দখল’ করে অস্থায়ী দোকানদারির বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু হয়েছে।
এতেই বিপাকে পড়েছেন প্রচুর হকার। তাঁদের বক্তব্য, মলের সামনে গত ১০-১৫ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছেন। প্রশাসন হঠাৎ এ ভাবে দোকান তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাঁরা বুঝতে পারছেন না কী করবেন। হকারদের দাবি, দোকান চালানোর জন্য প্রতি ১০০, ২০০ এমনকি ৫০০ টাকা করে কিছু ব্যক্তিকে দিতে হত। দোকানদের কেউ কেউ মাসে ন’হাজার টাকা করেও দিয়ে এসেছেন দোকান টিকিয়ে রাখার জন্য। সুজিত যাদব নামে আর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘প্রতি দিন ১০০ টাকা করে দিতে হয়। আমি প্রায় দু’-তিন বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। এ বার অন্য কোথাও জায়গা দেখতে হবে।’’
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জমিটি সরকারি। টাকা না-দিলে দোকান বসানো যাবে না। এই রীতিই বছরের পর বছর চলে আসছে। যাঁদের তাঁরা এত দিন টাকা দিয়ে এসেছেন, তাঁরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কি না, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে রাজি হননি ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ী স্মরণ কুমার বলেন, ‘‘প্রায় সাত-আট বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনও সাত হাজার, আবার কখনও ন’হাজার টাকাও দিয়েছি। স্থানীয় কিছু ছেলেদের এই টাকাটা দিতে হয়৷ কিন্তু নাম প্রকাশ্যে আনতে পারব না।’’
বুধবার শিলিগুড়ির বিধান রোডের দু’পাশে বসে থাকা হকারদেরও রাস্তা থেকে তুলে দেওয়া হয়েছে। উচ্ছেদ হওয়া হকারদের দাবি, দোকানের জন্য এত দিন তাঁরা পার্কিং সংস্থা ও পুরসভাকে টাকা দিয়েছেন। তার স্লিপও রয়েছে। স্লিপ দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে কখনও ২০ টাকা, কখনও ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে প্রতিদিন। ব্যবসায়ী অনিল প্রামাণিক বলেন, ‘‘হঠাৎ করে এ ভাবে তুলে দিলে তো আমরা অথৈ জলে পড়ে যাব। কাল থেকে কী ভাবে সংসার চলবে, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy