Advertisement
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Flood situation in North Bengal

ভাঙন-ভয়ে বাড়ি ভেঙে ‘নিরাশ্রয়’ বহু পরিবারই

ণ্ডাই থেকে চর সুজাপুর যাওয়ার রাস্তা ভেঙে গিয়ে সেখান দিয়ে হু হু করে গঙ্গার জল ঢুকছে গ্রামগুলিতে। বিপাকে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। চাষের জমিও জলের তলায় চলে গিয়েছে।

গঙ্গা ভাঙনের আতঙ্কে ঘরবাড়ি ভেঙে আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঘোড়ায় টানা গাড়ি করে। মঙ্গলবার সকালে মালদহের পারলালপুরে। ছবি: জয়ন্ত সেন।

গঙ্গা ভাঙনের আতঙ্কে ঘরবাড়ি ভেঙে আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঘোড়ায় টানা গাড়ি করে। মঙ্গলবার সকালে মালদহের পারলালপুরে। ছবি: জয়ন্ত সেন।

জয়ন্ত সেন
পারলালপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০২
Share: Save:

কেউ গঙ্গায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। কেউ দিনমজুরি করেন বা বিড়ি বাঁধেন। কারও স্ত্রী-ছেলেমেয়ে এখানে থাকলেও গৃহস্বামী রোজগারের আশায় গিয়েছেন ভিন‌্ রাজ্যে। তিন দিন লাগাতার ভাঙনের আতঙ্কে পরিবারগুলি ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।এলাকার একটি ফাঁকা জমিতে ঘরবাড়ির টিন, কাঠ জড়ো করছেন তাঁরা। এ পরিস্থিতি মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুর-শোভাপুর পঞ্চায়েতের পারলালপুরের। গঙ্গার জলস্তর বাড়ায় প্লাবিত হয়ে পড়েছে পারদেওনাপুর-শোভাপুর, কৃষ্ণপুর, বাখরাবাদ পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। মণ্ডাই থেকে চর সুজাপুর যাওয়ার রাস্তা ভেঙে গিয়ে সেখান দিয়ে হু হু করে গঙ্গার জল ঢুকছে গ্রামগুলিতে। বিপাকে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। চাষের জমিও জলের তলায় চলে গিয়েছে।

গঙ্গায় মাছ ধরে সংসার চালান পারলালপুরের মানিক হালদার। অনেক কষ্টে টিনের ঘর বানিয়েছিলেন বছর তিনেক আগে। মানিক বলেন, “কষ্টের রোজগারে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই করেছিলাম। কিন্তু এমনই কপাল গঙ্গা ভাঙনের আতঙ্কে মঙ্গলবার নিজের হাতে তা ভেঙে নিতে হল। পরিবার নিয়ে কোথায় ঠাঁই নেব? নিজের তো জায়গা নেই!” ভাঙনে নদী বাড়ির কাছে চলে এসেছে খবর পেয়ে চেন্নাই থেকে ফিরেছেন পরিযায়ী শ্রমিক মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ভিন‌্ রাজ্যে দিনমজুরির করে একটা পাকা বাড়ি করেছিলাম। কিন্তু গঙ্গা যে ভাবে ধেয়ে আসছে, তাতে তা ভেঙে ফেলতে হল। কিছুটা দূরে দাদার বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছি।” চায়না হালদার বলেন, “বিড়ি বেঁধে সংসার চলে। গঙ্গার ভাঙনে টিনের বাড়ি ভেঙে পড়ায়, অন্যের বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিতে হয়েছে।” পারলালপুর গ্রামে ভাঙনের জেরে অন্তত ২২টি পরিবারকে তিন দিনের মধ্যে ঘরবাড়ি ভেঙে সরিয়ে নিতে হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে ত্রাণ মেলেনি বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে এলাকা পরিদর্শনে যান কালিয়াচক ৩-এর বিডিও সুকান্ত শিকদার। প্রশাসন সূত্রে খবর, ভাঙন দুর্গতদের ত্রাণ বিলি করা হবে। বিকেলে পারলালপুরের বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (উত্তর) গোরাচাঁদ দত্ত, সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ ভট্টাচার্য, এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ। স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছেন তাঁদের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

flood kaliachak
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE