প্রতীকী চিত্র।
আমপান ঘূর্ণিঝড়ের পরে এক মাস কাটতে চলল। কিন্তু অভিযোগ, মালদহের ক্ষতিগ্রস্ত আমচাষিরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি। ঘূর্ণিঝড়ে আম চাষে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি সঙ্কটে আম ব্যবসায়ীরাও। এই পরিস্থিতিতে জেলার আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের সরকারি অনুদান দিতে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিল জেলার আম ব্যবসায়ী সংগঠন।
আম চাষের উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল মালদহের অর্থনীতি। কিন্তু এ বার একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হওয়ায় তাতে প্রভাব পড়েছে। জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহে প্রায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়। ফি বছর জেলায় গড়ে আমের ফলন হয় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন।
কিন্তু চাষিরা জানান, এ বছরের শুরুতে শীত দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় আমের মুকুল দেরিতে আসে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে আম চাষ মার খায়। ২১ মে বিকেল থেকে ‘আমপান’ আছড়ে পড়ে জেলার বিভিন্ন অংশে। আর তাতে আম চাষ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে মানিকচক, রতুয়া ২, ইংরেজবাজার, কালিয়াচক ২, গাজলের মতো ব্লকে প্রচুর আম ঝরে পড়ে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে জেলার ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর এলাকার প্রায় ৩৯ হাজার মেট্রিক টন আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিপূরণের সেই রিপোর্ট রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু জেলার ক্ষতিগ্রস্ত আম চাষিদের একাংশের অভিযোগ, ঘূর্ণিঝড়ের পরে এক মাস কাটতে চলল। চাষিদের কেউ এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন না।
জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আম চাষে ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও না আসায় তা জেলার চাষিদের মধ্যে বিলি করা যায়নি।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে আম ব্যবসাতেও। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর এই সময় জেলা থেকে প্রতি দিন অন্তত ৫০টি ট্রাক বোঝাই আম রাজ্যের বিভিন্ন জেলা, এমনকি বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে রফতানি করা হয়। কিন্তু এ বার ভিন রাজ্যে আম পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
‘মালদহ ম্যাঙ্গো মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি উজ্জল সাহা বলেন, ‘‘প্রতি বছর মালদহে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ে চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত। ওই ঝড়ে জেলায় আম চাষ ও ব্যবসায় অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’’ তিনি জানান, এণন পরিস্থিতিতে চাষি ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে অন্তত ১০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy