‘হ্যালো স্যর! আমি মাকে খুন করেছি।’ ফোনের ও প্রান্তে যুবকের গলা কাঁপছে তখনও। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফোনের এ প্রান্তে ছিলেন শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার এক পুলিশকর্মী। অল্প কথায় ফোনটা রেখেই বলে দেওয়া ঠিকানায় ছোটেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখল রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক মহিলা। পাশে পড়ে রক্তমাখা ছুরি। মাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল ব্যাঙ্ককর্মী ছেলেকে। মঙ্গলবার এই ঘটনায় শোরগোল শিলিগুড়ির এক নম্বর ওয়ার্ডে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, শিলিগুড়ির মহানন্দা ব্রিজ় সংলগ্ন এলাকার পুরনো বাসিন্দা কৌশল্যা মল্লিক। থাকতেন দুই ছেলের সঙ্গে। বড়ছেলে অজয় মল্লিক একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের চুক্তিভিত্তিক কর্মী। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, নিত্যদিন মায়ের সঙ্গে বচসা হত দুই ছেলের। মঙ্গলবারও তেমনটা হয়েছিল। তার মধ্যেই রাগের চোটে মাকে খুন করে বসেন বড়ছেলে।
আরও পড়ুন:
অভিযুক্ত পুলিশের কাছে মাকে খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানান, মায়ের মদে আসক্তিতে তিনি বিরক্ত ছিলেন। সে নিয়েই ঝগড়া হত। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে অজয় বাড়ি ফেরার পরেই মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেন। উত্তেজিত হয়ে একটি ছুরি নিয়ে মাকে আঘাত করেন তিনি। অস্ত্রের আঘাতে মহিলা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন ছেলে। তার পর থানায় ফোন করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেই অজয়কে আটক করে৷ কৌশল্যার রক্তাক্ত দেহ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মহিলাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। পরে অজয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্বাভাবিক ভাবে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠক বলেন, “কী কারণে এই খুন, তা আমাদের অজানা। তবে এঁরা ওয়ার্ডের বহুদিনের বাসিন্দা। মহিলার দুই ছেলে। আমরা প্রত্যেকেই এই ঘটনায় অবাক।”
ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, “ছেলে মাকে ছুড়ি নিয়ে আঘাত করেছে, এমন একটি তথ্য পেয়েছি। প্রধাননগর থানায় খবরটি আসে। পুলিশ মহিলাকে রক্তাক্ত অবস্থায় জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মামলা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, মায়ের মদ্যপান নিয়ে সমস্যা ছিল ছেলের। তদন্ত চলছে।”