দুর্ঘটনা: কালীপ্রতিমার বিসর্জনের সময়ে এমন হুড়োহুড়িতেই ঘটে বিপত্তি।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় তার নীচেই চাপা পড়ে হারু দাস (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডীতে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে হুলস্থুল পড়ে যায় এলাকায়। একই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিমা বিসর্জনের পর বাজি প্রদর্শনীও।
প্রতিমার উচ্চতা ৪৫ ফুট। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, প্রতিমা বিসর্জনের সময় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অনেকে প্রতিমার উপরেও উঠে পড়েন। আর পুলিশ প্রশাসন কিংবা উদ্যোক্তা কারও কোন হেলদোল নেই বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। যদিও ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হবিবপুর ব্লকের বিগ বাজেটের পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম বুলবুলচণ্ডী বাজার সর্বজনীন কমিটির এই কালী পুজো। ৭১ বছর ধরে পুজো হচ্ছে। পুজোকে ঘিরে ১৫ দিন ধরে মেলাও চলেছে গ্রামে। পুজোর মতো বড়ো কালী বিসর্জনেও উপচে পড়ে মানুষের ভিড়। হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান বড় কালীর বিসর্জনে।
হারুবাবু প্রতিমার নীচে পড়ে যাওয়ায় তাঁকে প্রথমে উদ্যোক্তারা নিয়ে যান স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁকে তড়িঘড়ি স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তবে মেডিক্যালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। হারুও রশি ধরে প্রতিমা টানছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়েরা।
এ দিনের দুর্ঘটনায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন। প্রত্যক্ষদর্শী রমেশ সাহা বলেন, “প্রতিমা যে পথ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই রাস্তাটি প্রায় ১২ ফুট চওড়া। রাস্তার দু’ধারে বাজার রয়েছে। সংক্রীর্ণ রাস্তা দিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। বিসর্জনের বিষয়টি সকলের ভেবে দেখা উচিত।” আর এক জন বলেন, “আগে রাস্তা ফাঁকা ছিল। এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আর মানুষের ভিড়েও বাড়ছে। তবে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই।” পুজো উদ্যোক্তা প্রশান্ত রায় বলেন, “ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। শুরু থেকে এমনই নিয়মে পুজো, বিসর্জন হয়ে আসছে। এবারে কিভাবে এই কাণ্ড ঘটল, কিছুই বুঝতে পারছি না। ” ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হবিবপুর ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা। তিনি বলেন, “দুর্ঘটনাটি কি ভাবে ঘটল খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” হবিবপুর থানার আইসি ত্রিদীপ প্রামাণিক বলেন, “মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুলবুলচণ্ডীরই পাঁচ ব্যক্তি পুজোটি শুরু করেছিলেন ৭১ বছর আগে। এই পুজোর চমক থাকে প্রতিমার উচ্চতা। যার টানেই পুজো দেখতে ভিড় জমান জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এমনকি, বিহার এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান। পুজো কমিটির সম্পাদক সুবোধ রায় বলেন, “প্রতিমা ১৫ দিন ধরে মণ্ডপে রাখা হয়। তার আগে কখনও প্রতিমা বিসর্জন করা হয় না। কথিত আছে ১৫ দিন পর মা নিজে থেকেই বিসর্জনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। ৭০ বছর ধরে এমনই নিয়মে দেবীর বিসর্জন হয়ে আসছে। তবে এ বারে এমন ঘটনা ঘটবে তা ভাবতেইপারছি না। ”
প্রতিমা বিসর্জনে যাওয়ার ঘাটটি কংক্রিটের। বাজারের পথ ধরেই প্রতি বছর নিয়ে যাওয়া হয়। দর্শনার্থীদের দাবি, বিসর্জনের সময় বেশ কিছু যুবক উৎসাহিত হয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিমার কাঠামোর উপরে উঠে পড়েন। এ ছাড়া প্রচন্ড ভিড়ে ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। সেই সময়ই হারু কাঠামোর নীচেপড়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy