শনিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারের রাস্তায় হাঁটছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি - সন্দীপ পাল
সরকারি সভায় যোগ দিতে আলিপুরদুয়ারে এসে হেঁটে জনসংযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসংযোগে বেরিয়েই আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তাটির দুর্দশা নিজের চোখে দেখলেন তিনি। ওই রাস্তাটি সংস্কার করতে নির্দেশ দিলেন প্রশাসনকে। যার জেরে শনিবার রাতের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় সেই রাস্তা সংস্কারের কাজ। এই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন প্যারেড গ্রাউন্ডে আজ, রবিবার সরকারি সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। যে সভাকে ঘিরে তৎপরতা তুঙ্গে আলিপুরদুয়ার প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূলের অন্দরে।
শনিবার দুপুর পৌনে ৩টে নাগাদ বাগডোগরা থেকে হেলিকপ্টারে হাসিমারা হয়ে আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডের অস্থায়ী হেলিপ্যাডে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে ছিলেন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। হেলিপ্যাড থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় সোজা চলে যায় সার্কিট হাউজ়ে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সার্কিট হাউজ়ে প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন তিনি।
তার পরেই বিকেলে মমতা বেরিয়ে পড়েন হাঁটতে। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতেই কার্যত শহরবাসীর ঘরের দুয়ারে পৌঁছে যান তিনি। সার্কিট হাউজ় থেকে বেরিয়ে কলেজ হল্ট, বক্সা ফিডার রোড দিয়ে দমকল পেরিয়ে ‘ডুয়ার্সকন্যা’র সামনে দিয়ে প্যারেড গ্রাউন্ড সংলগ্ন কলেজ রোডে যান তিনি। তার পরে প্যারেড গ্রাউন্ড সংলগ্ন চার দিকের রাস্তাতেই হাঁটেন মমতা। কোলে তুলে নেন পথচলতি শিশুদের। সেই সময় নিজের চার বছরের অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সবিতা সিংহ দে। শিশুটির শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। সবিতা বলেন, “ছেলের মাথায় সিস্ট হয়েছে। চিকিৎসার জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।”
এরই মধ্যে হাঁটতে-হাঁটতে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যান আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ভাঙাচোরা রাস্তায়। ততক্ষণে পৌঁছে যান আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধি তৃণমূলের মৌসুমী বাগচি বিশ্বাস। রাস্তার ওই অবস্থার কারণ কী তাঁর থেকে জানতে চান মমতা। পরে মৌসুমী বলেন, “৩ নম্বর ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়লেও রাস্তাটিপুরসভার অধীনে পড়ে না। এই রাস্তায় চলতে দুর্ভোগে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। মুখ্যমন্ত্রীকে সেটাই জানিয়েছি।” মমতাও বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যে রাস্তাটা দেখলাম, সেটা ডিএমকে দেখতে বলেছি। কারণ, এখানে পড়ুয়াদের পাশাপাশি অনেক মানুষ যাতায়াত করেন। কতগুলো রাস্তা পড়ে থাকে, যেগুলো চোখে না দেখলে হয় না। সে জন্য আমি নিজে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।’’ পরে রাতেই রাস্তার কাজ শুরু হয়ে যায়। আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে এ দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে।” রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরুর সময় রাতেই পুরপ্রধানের পাশাপাশি রাজ্যসভার সদস্য তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক ছাড়াও আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল যান।
আলিপুরদুয়ার বিস্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জয়দীপ রায়ের বক্তব্য, “রাস্তা সংস্কার হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে সাধারণ মানুষের সকলেই উপকৃত হবেন।” এ দিকে, আজ, রবিবার প্যারেড গ্রাউন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর সভাকে ঘিরে প্রশাসনিক তৎপরতা তুঙ্গে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার অন্তত পঞ্চাশ হাজার মানুষের জমায়েত হতে পারে সভায়। দুপুরের এই সভা থেকেই চা বাগানে জমির পাট্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকের দাবি, “জেলার প্রতি অঞ্চল থেকেই মানুষ রবিবারের সভায়যোগ দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy