তোমাদেরই: মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিনোদ দাস
চা বাগানের শ্রমিকদের রাজ্য সরকারের তরফে পাট্টা দেওয়ার বিশেষ নীতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে প্রশাসনিক সভা থেকে এ কথা জানান তিনি। এ দিন সভামঞ্চ থেকে পাহাড়ের ধোতরে বাগানের স্মৃতি রাই এবং গাঙ্গু সুব্বার হাতে পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করা যাবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, রেলের জমি থেকেও উচ্ছেদ করা যাবে না। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভার পরে পিনটেল ভিলেজে শতাধিক বাসিন্দার হাতে পাট্টা তুলে দেন গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের পাট্টার বিষয়টি তাঁদের দীর্ঘদিনের প্রাপ্য অধিকার। তাঁদের পাট্টা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ছ’সাত মাসের মধ্যে পরিকল্পনাটি কার্যকর হয়ে যাবে বলে আশা করি। এর জন্য একটা নীতি তৈরি করা হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে সাতটি চা বাগান এবং কিছু বন্ধ চা বাগান নিয়ে পর্যালোচনা করছি। ওই জমিগুলো নিয়ে বাগানে বসবাসকারীদের পাট্টা দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।’’ এ দিন মঞ্চ থেকে চার হাজার জনকে পাট্টা দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে চারটি জেলায় ১২৩৭ জন চা বাগানের জমির পাট্টা পেয়েছেন। দার্জিলিঙে ১৮৯ জন, কালিম্পঙে ৪৮ জন, জলপাইগুড়িতে ১৫০ জন এবং আলিপুরদুয়ারে ৮৫০ জন। এ ছাড়া, কোচবিহার জেলার ২০৪০ জনকে কৃষিজমি, বসবাসের জমি এবং উদ্বাস্তু পাট্টা দেওয়া হয়েছে। চা বাগানে পাট্টা দেওয়ার ক্ষেত্রে সেই বাগানে সম্ভব না হলেও আশপাশের চা বাগানে পাট্টার ব্যবস্থা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে এ দিন সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, উদ্বাস্তু উচ্ছেদ করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলে দিয়েছি, উদ্বাস্তুদের আমরা ‘ফ্রিহোল্ড রাইট’ দিয়েছি। যাঁরা এখনও পাননি, তাঁরাও পাবেন। রেলের জমিতে উচ্ছেদ করা যাবে না। পুনর্বাসন না দিয়ে, জমির বদলে জমি না দিয়ে ইচ্ছে মতো উচ্ছেদ করা যাবে না। কোর্টের অর্ডার থাকলে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।’’
এ দিন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কেন্দ্রীয় মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল বলেন, ‘‘দলের তরফে যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করা হল।’’ মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান থেকে ফিরে পিনটেল ভিলেজে শতাধিক বাসিন্দার হাতে পাট্টা তুলে দেন অনীত থাপা। মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের সময় কোচবিহারের উৎসব অডিটরিয়ামে প্রশাসনের তরফে তিনশোরও বেশি বাসিন্দাকে পাট্টা দেওয়া হয়। কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদিয়ান বলেন, ‘‘এর আগে হাসিমারায় এবং এ দিন দু’টি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী দু’হাজারেরও বেশি বাসিন্দাকে পাট্টা দিলেন।’’
এ দিন ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের জন্য মূল মঞ্চের পাশে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের অনুসরণে ভাষাশহিদ বেদী করা হয়। সভাস্থলে এসেই সেখানে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে উঠে শুরুতে শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সাড়ে চারশো কোটি টাকার বেশি অর্থ বরাদ্দের ৮৮টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের কর্মসূচি নিয়ে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক তথা বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত আর লোকসভা ভোটের আগে এ সব চমক। দু’চার জনকে পাট্টা দেওয়া হয়, আবার ভুলে যায়। সদিচ্ছা থাকলে ১২ বছর সময় লাগত না। এটা মানুষের বহু দিনের দাবি। আমরা সরকারে এলে সমস্ত মানুষকে পাট্টা দেওয়া হবে।’’
(তথ্য সহায়তা: নমিতেশ ঘোষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy