—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ছোটবেলায় মায়ের কোলে যেতে হয়েছিল জেলে। তার পরে থেকে হোমে। আজ, শনিবার মাধ্যমিকের শেষ পরীক্ষা দিতে যাবে মেয়েটি। তার জেদ মাধ্যমিকের পরে, যে ভাবেই হোক একটা চাকরি করে কিছু রোজগার করবে। তার পরে, মাথা গোঁজার জন্য একটা ছাদ, জেল থেকে ছাড়িয়ে মাকে এনে রাখবে সে আশ্রয়ে। শুক্রবার জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা দিয়ে ফিরে হোমের দরজায় দাঁড়িয়ে মেয়েটি বলল, “আমার বয়স ১৬ হয়ে গিয়েছে। ১৮ হলেই হোম থেকে বার হতে হবে। তার আগে একটা চাকরি চাই, মাকে জেল থেকে এনে ছোট্ট হলেও একটা ঘর দিতে হবে।”
মদ্যপ বাবার সঙ্গে মায়ের প্রায় মারামারি হত বলে আবছা মনে আছে মেয়েটির। সে শুনেছে এক দিন সন্ধ্যাবেলায় সে মারামারিতেই বাবার মৃত্যু হয়। মায়ের যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি হয়। মায়ের কোলে সে-ও জেলে গিয়েছিল। খানিকটা বড় হওয়ার পরে, হোমে থাকা শুরু। স্কুলেও ভর্তি হয়। পড়াশোনার সঙ্গে নাচের নানা পুরস্কার মেয়েটি এনেছে হোমে। এ দিকে ভাল ব্যবহারের জন্য ১৪ বছর পরে মাকে জেল থেকে ছাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার দোর্জে ভুটিয়া বলেন, “ভাল ব্যবহার-সহ নানা রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করে যাবজ্জীবন শাস্তি পাওয়া বন্দিদের ১৪ বা ১৬ বছরের পরে জেল থেকে ছাড়া হয়। ওই মহিলাও ১৪ বছর পার করেছেন। পুলিশের রিপোর্ট-সহ সব শর্ত পূরণ করলে, ছাড়া পেতে পারেন।”
মেয়েটি পড়াশোনায় ভাল, প্রতি বছর পরীক্ষায় ভাল ফল করে বলে জানান হোমের সুপার ডালিয়া মিত্র। তিনি বলেন, “ও মাধ্যমিক দিয়ে একটা চাকরি করার কথা বারবার বলে। ভাল করে পরীক্ষা দিয়ে মাকে জেল থেকে এনে বাড়িতে রাখবেএটাই যেন ওর জেদ।”
মেয়েটির দাবি, “বাবার বাড়িতে মাকে ঢুকতে দেবে না বলে দিয়েছে, মামাবাড়িতেও রাখার কেউ নেই। তাই মা এখনও জেলে আছে। ভিডিয়োতে মাঝে মধ্যে মায়ের সঙ্গে কথা হয়, মাকে বলেছি, মাধ্যমিক পরীক্ষা হোক, একটা চাকরি করে সেই সঙ্গে পড়াশোনা করে যাব। চাকরির আয় দিয়ে একটা ঘর ভাড়া করে মাকে নিয়ে থাকব। দিদির সঙ্গেও কথা হয়েছে।”মেয়েটির দিদিও হোম থেকে উচ্চ মাধ্যমিক দিয়ে স্নাতক স্তরে পড়ছেন। দিদির কথায়, “বোন বারবার মাকে নিয়ে আসার কথা বলে। বোন পাশ করুক, দু’জনের আয় দিয়ে ঘর নিয়ে মাকে এনে রাখব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy