ধরপাকড়: লকডাউন চলছে। তার মধ্যেই মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন এক যুবক। তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তায়। ছবি: সন্দীপ পাল
শহরের সাধারণ বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী মহল— নতুন করে পূর্ণ লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি তুলছিলেন সকলেই। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির স্টেট গেস্ট হাউসে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পরে শহরের সার্বিক লকডাউনের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানোর ঘোষণা করা হল।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, শহরের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সার্বিক লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হল। আজ, বুধবার লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ বারে তার মেয়াদ ২৯ জুলাই অবধি বেড়ে গেল। শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডে এই পূর্ণ লকডাউন বলবৎ থাকছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো ছাড়াও করোনা সংক্রমণের টেস্ট, কিয়স্ক ভ্যান, সেফ হাউজ় বাড়ানো, কিছু বাজার খোলা, শহর লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় কনটেনমেন্ট জ়োনের সংখ্যা বাড়ানো নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। শহরে খাদ্যদ্রব্যের জোগান, সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়, চম্পাসারির আনাজ এবং ফলের পাইকারি বাজার পুলিশ-প্রশাসনের নজরদারির মধ্যে খোলা হবে। তবে পাইকারি মাছ বাজার বন্ধই থাকবে। চম্পাসারির এসজেডিএ-র মার্কেটও খুলবে। এলাকার অন্য সব বাজার বন্ধই থাকবে। চাল-ডালের মতো নিত্যপণ্যের নয়াবাজার-খালপাড়ার পাইকারি বাজার খোলা হবে। কিন্তু তা কী প্রক্রিয়ায় খোলা হবে, সেটা নিয়ে আগে ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বসে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে সপ্তাহের ক’দিন, সকাল-বিকাল হবে কিনা, ভিন্ রাজ্য বা জেলার গাড়ি নিয়ম মেনে ঢোকানোর হবে কিনা— সেই নিয়ে নতুন কিছু নিয়ম চালু হবে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, নয়াবাজার খোলা থাকায় এলাকায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাজার বন্ধের পক্ষেই সকলে সওয়াল করেছেন।
এ দিনই সকালে বণিকসভা ইস্টার্ন এবিসি চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে পর্যটনমন্ত্রী, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির জেলাশাসককে ই-মেল করে লকডাউন বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। এই সংগঠনের আওতায় শিলিগুড়ির ১৯টি বড় ব্যবসায়ী সংগঠন রয়েছে। বণিকসভার আহ্বায়ক সুরজিৎ পাল বলেন, ‘‘সরকার, মন্ত্রী, প্রশাসনকে আমরা আগেও লকডাউনের জন্য বলেছিলাম। নতুন করে আবার বলেছি। শহরকে বাঁচাতে আর কোনও উপায় আপাতত নেই।’’
সুরজিৎ আরও বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি, গত ১৬ জুলাই থেকে শহরে সংক্রমণের হার কমছে। ২০ জুলাই বাড়লেও সেগুলির মধ্যে আগের কিছু টেস্টের রিপোর্ট আছে বলে জানা গিয়েছে। আরও সাত দিন দেখলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আমরা, ব্যবসায়ীরা লোকসান মাথায় নিয়েও শহরকে বাঁচাতে চাইছি।’’
জেলা প্রশাসনের কর্তারা এ দিন পুলিশকে মাস্ক পরা এবং অকারণে ঘোরাফেরা নিয়ে কড়া পদক্ষেপ চালিয়ে যেতে বলেছেন। বিশেষ করে, মাস্ক পরার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, গত কয়েক দিনে শহরের চেহারা কিছুটা বদলালেও পুলিশ শুধু মোটরবাইক-স্কুটি ধরাতেই বেশি মন দিচ্ছে। এর সঙ্গে গাড়ি, টোটো, অটো নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানোটা দরকার। ‘নিত্যপণ্য আনতে যাচ্ছি’, ‘হাসপাতালে যাচ্ছি’ বলে বহু টোটো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তেমনই, কিছু মানুষ রোজ বাজারের নাম করে বাইরে বার হচ্ছেন। তাই অলিগলিতে ধরপাকড়টা বাড়ানো প্রয়োজন।
শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক সুমন্ত সহায় বলেছেন, ‘‘পুলিশকে আইন মেনে কঠোর পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy