থার্মোকলে ভরেছে নদী।নিজস্ব চিত্র
তিন মাসের লকডাউনেও দূষণের বিষ থেকে মুক্তি পায়নি করলা’র জল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রকাশিত মে এবং জুনে নদীর জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট জানাচ্ছে, করলা নদীর জলের মান রয়েছে আগের মতোই। পর্ষদের মতে, লকডাউনের সময়েও করলা নদীর জল ছিল মানুষের ছোঁয়ার পক্ষে ‘ক্ষতিকারক।’ রিপোর্ট অনুযায়ী, করলার জলে লকডাউনের সময়েও অক্সিজেনের অভাব আগের মতোই ছিল, উল্টে মে মাসের পূর্ণ লকডাউনের সময়ে তুলনামূলক ভাবে জলে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বেড়েছে। লকডাউনে মানুষের ঘরবন্দি থাকার সময়ে বাতাসে দূষণ কমেছে বলে তথ্য মিলেছে, ধুলো না থাকায় গাছের পাতা ঝকঝকে সবুজ হয়ে সালোকসংশ্লেষে সুবিধে হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মানুষজনের কোলাহল, গাড়ির হর্নের শব্দ না থাকায় শহর জুড়ে প্রচুর পাখির ডাক শোনা গিয়েছে সবসময়েই। যদিও জলপাইগুড়ি শহরের মধ্যখান দিয়ে যাওয়া করলা নদীর দূষণ এতকটুকুও কমেনি, বলছে পর্ষদের তথ্য।
শহরকে দু’ভাগে ভাগ করে বয়ে যাওয়া করলা নদীকে জলপাইগুড়ির ‘টেমস’ বলে পরিচয় দিতে ভালবাসেন জলপাইগুড়ির অনেকেই। এই নদীটি রাজ্যের সবথেকে দূষিত পঞ্চাশটি নদীর মধ্যে ১৩ নম্বরে। দূষিত নদী হওয়ায় করলার জলের নমুনা নিয়ম পরীক্ষা করে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ১৯ মে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে করলা নদীর জলে অক্সিজেনের চাহিদা (বিওডি) রয়েছে প্রায় ২ ইউনিট। এই চাহিদা সাধারণত ১ ইউনিটে এর কম থাকতে হয়। চাহিদা বেশি হওয়া মানে নদীর জলে অক্সিজেনের অভাব রয়েছে। সেই তথ্য রয়েছে মে’র রিপোর্টেই। করলায় দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ৭.২ ইউনিট। অথচ তার আগের মাসে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল ৮.৬ ইউনিট। লকডাউনে অক্সিজেনের মাত্রা উল্টে কমে গিয়েছে করলা নদীতে।
একই প্রবণতা দেখা গিয়েছে কলিফর্ম নামে এক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে। লকডাউনের সময়ে মে মাসে করলার জলে টোটাল কলিফর্মের মাত্রা হয়েছে ১৩০০০ ইউনিট। এই ব্যাক্টিরিয়া জলে বেশি থাকলে সেই জল স্নানেরও অযোগ্য হয়। এই জলে হাত ছোঁয়ালে চর্মরোগ হয়, পান করলে রোগের ভয় থাকে বলে দাবি। করলা নিয়ে একাধিকবার সমীক্ষা করা বঙ্গীয় ভূগোল মঞ্চের উত্তরবঙ্গের অন্যতম কর্তা জাতিস্মর ভারতী বলেন, “নদীর ওপর অন্য সময়ে যে অত্যাচার হয়, লকডাউনেও বন্ধ হয়নি। সারা শহরের আবর্জনা ফেলা হয়েছে নদীতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy