Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Jeevan Singh

Jeevan Singh KLO: একই দাবি, জীবনকে কি তাই ফেরানোর চেষ্টা শুরু

জোড় হাতে সকলকে ‘দন্ডবত’ জানিয়ে বার্তা শুরু করলেন সাধারণ গড়পরতা রাজবংশী চেহারার এক ব্যক্তি। রাজবংশী কথ্য ভাষায় দন্ডবত মানে প্রণাম।

ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

সদ্য বিধানসভা ভোটের ফল বার হয়েছে। আকাশ-বাতাসে তখনও সবুজ আবির ফিকে হয়নি। এর মধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল একটি ভিডিয়ো (আনন্দবাজার যার সত্যতা যাচাই করেনি)।

জোড় হাতে সকলকে ‘দন্ডবত’ জানিয়ে বার্তা শুরু করলেন সাধারণ গড়পরতা রাজবংশী চেহারার এক ব্যক্তি। রাজবংশী কথ্য ভাষায় দন্ডবত মানে প্রণাম। গায়ে জংলা পোশাক, মাথায় টুপি। পিছনে কালাশনিকভ সিরিজের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র।

কী বললেন তিনি? শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার নিরীহ ভোটারের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলতে শুরু করলেন সাধারণ রাজবংশীদের উপরে অত্যাচারের কথা। বললেন, “কলকাতাকেন্দ্রিক কোনও দল কোচ-কামতাপুরীদের ভাল চায় না।”

তিনি জীবন সিংহ।

তৃণমূলের বিধানসভা জয়ের তিন দিনের মাথায় তাঁর সেই হুঙ্কার শুনে এক তৃণমূল নেতা মন্তব্য করেছিলেন, “গন্ধটা খুব সন্দেহজনক!”

বিজেপির অলিখিত ‘নম্বর টু’ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজের যুক্তি বোঝাতে মাঝেমধ্যেই ‘ঘটনা পরম্পরা’ বুঝতে বলেন। ভোটের তিন দিন পরে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সেই ভিডিয়োয় বিজেপিকেও কামতাপুর প্রসঙ্গে আক্রমণ করেছিলেন জীবন। কিন্তু তার পরে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সবুজ সঙ্কেতে কী ভাবে জীবনের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে মাঠে নামলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, কোন জাদুমন্ত্রে তা সম্ভব হল, সেটা বুঝতে গেলেও ঘটনা পরম্পরার দিকে চোখ রাখতে বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। বলছেন, খেয়াল রাখতে হবে, প্রথম ভিডিয়োটির পরে কার্যত বিজেপি বিরোধিতা আর করেননি জীবন। বরং কখনও বিজেপি সাংসদ জন বার্লা এবং নিশীথ প্রামাণিকের পক্ষ নিয়েছেন। কখনও দাঁড়িয়েছেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ অনন্ত মহারাজের পাশেও। আবার সরাসরি হুমকিও দিয়েছেন তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায়, অনন্ত রায়দের নামে। সর্বশেষ ভিডিয়োয় তো খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।

যা শুনে এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, “নিখুঁত চিত্রনাট্যের একটা খণ্ড সমাপ্ত হল।”

প্রশ্ন হল, হঠাৎ অন্তরালের জীবন ছেড়ে জীবন সিংহ বেরিয়ে এলেন কেন? তা হলে তখন থেকেই কি ঘটনা পরম্পরা শুরু হয়ে গিয়েছিল? ‘ট্র্যাক টু’ বলে একটা কথা চালু আছে কূটনীতিতে। তা হলে কি জীবনের আত্মপ্রকাশ কি তেমনই কোনও ঘটনা? যার মধ্যে লুকিয়ে আছে আরও বড় কোনও পরিকল্পনা, উত্তরবঙ্গকে ঘিরে? রাজনীতি চর্চাকারীরা বলছেন, বিজেপি বরাবরই ছোট রাজ্যের পক্ষে। এ বারে বিধানসভা ভোটের পরে যখন দেখা যায়, উত্তরবঙ্গেরও সামান্য কিছু অংশ ছাড়া তাদের প্রভাব অনেকটাই কমে গিয়েছে, তখন থেকেই কি রাজ্য ভাগের দাবিতে ইন্ধন দিতে শুরু করে গেরুয়া ব্রিগেড?

এই তত্ত্ব যদি ঠিক হয়, তা হলে নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র মেনে জীবন সিংহকে সহজেই নিজেদের শিবিরে নিয়ে নিতে পারে বিজেপি। কারণ প্রতিটি বস্তুকণা যেমন পরস্পরকে টানে, তেমনিই উত্তরবঙ্গেও ‘মাটি’ হারাতে থাকা বিজেপির আগামী লোকসভা ভোটে ফের রাজবংশী সমর্থন চাই। না হলে উত্তরের লোকসভা আসনগুলি ধরে রাখা সম্ভব নয়।

বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় তাই নির্দ্বিধায় বলেন, “জীবন সিংহের দাবি এবং আমার দাবি একই। দুই দাবির মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। উত্তরবঙ্গ অবহেলিত, বঞ্চিত। তাই আলাদা রাজ্য চাই।”

(চলবে)

অন্য বিষয়গুলি:

Jeevan Singh KLO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy