কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ইঙ্গিত, অনাস্থা প্রত্যাহারের পথে যাচ্ছেন না তাঁরা।
অনাস্থা-সঙ্কট কাটাতে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের ডেকেছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব। গুরুত্বপূর্ণ সেই বৈঠক তিনি যাননি। কলকাতার সেই বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের সুস্পষ্ট নির্দেশ ছিল, দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রত্যাহার করতে হবে। ১০ দিন পরেও যে ইংরেজবাজার পুরসভায় অনাস্থা প্রত্যাহৃত হল না, তার পিছনেও সেই তিনিই। বৃহস্পতিবার তাঁর, অর্থাৎ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা অন্যতম বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ইঙ্গিত, অনাস্থা প্রত্যাহারের পথে যাচ্ছেন না তাঁরা। ফলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে রইল পুরবোর্ডের ভবিষ্যৎ।
গত ২৮ অগস্ট পুরপ্রধান তথা বিধায়ক তৃণমূলের নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই ১৫ জন কাউন্সিলর। নিয়ম অনুযায়ী, অনাস্থা আনার ১৫ দিনের মধ্যে আস্থাভোটে যেতে হয় পুরপ্রধানকে। সেই হিসেবে এ দিনই ছিল সেই সময়সীমার শেষদিন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কোন দিকে যেতে চলেছে এই পুরসভার ভবিষ্যৎ। যদিও কলকাতার বৈঠকে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবিলম্বে অনাস্থা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এই দু’সপ্তাহে সেই পথেই হাঁটেননি বিক্ষুব্ধেরা। দলীয় সূত্রের খবর, বিক্ষুব্ধদের এ ব্যাপারে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন কৃষ্ণেন্দুই। এ দিনও কৃষ্ণেন্দু ক্ষোভ উগড়ে দেন পুরপ্রধান নীহারের বিরুদ্ধে। নীহারের কট্টর বিরোধী হিসেবে পরিচিত কৃষ্ণেন্দু বলেন, “পুরপ্রধান দুর্নীতিতে জড়িত। তাঁকে এক দিন জেলে যেতেই হবে।” অনাস্থা কি প্রত্যাহার করবেন? এ প্রশ্নে তাঁর জবাব, “অনাস্থা-চিঠির ১৫ দিনের মধ্যে আস্থাভোটে যেতে হয় পুরপ্রধানকে। তিনি আস্থা ভোট না করলে সাতদিনের মধ্যে সভা ডাকবেন উপ-পুরপ্রধান। তিনিও না ডাকলে সভা ডাকতে পারেন তিনজন কাউন্সিলর এক হয়ে। তাই মাঝপথে অনাস্থা প্রত্যাহারের কোনও নিয়ম নেই।” এরপর মুর্শিদাবাদের ডোমকল, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পুরসভার অনাস্থা প্রসঙ্গ টানেন তিনি। তিনি বলেন, “ওই সব পুরসভায় দলেরই পুরপ্রধানদের বিরুদ্ধে দলেরই কাউন্সিলরেরা অনাস্থা এনে তাঁদের সরিয়েছেন। তাই ইংরেজবাজারও ব্যতিক্রম নয়।” অন্যদিকে, আস্থাভোটে কখনওই যাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন নীহার। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে তদন্তের পাশাপাশি ভিজিল্যান্স হোক। দুর্নীতি নয়, আড়াই বছরে মানুষের জন্য কাজ করেছি।”
এই পরিস্থিতিতে শহর জুড়ে একটাই আলোচনা। কী হবে এরপর? তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন নেতাজি মোড়ে একটি বেসরকারি হোটেল বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন কৃষ্ণেন্দু। সেখানে পরবর্তী কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে দলেরই এক বিশ্বস্ত সূত্রের ইঙ্গিত, ‘নির্দিষ্ট’ সময় পার হওয়ার পর নীহারকে সরিয়ে কৃষ্ণেন্দু নিজের আস্থাভাজন কাউকে পুরপ্রধান পদে বসাতে চাইছেন।
জেলা রাজনীতির অভিজ্ঞদের ব্যাখ্যা, এখনও খাস ইংরেজবাজার এলাকায় কৃষ্ণেন্দুর জোরদার রাজনৈতিক জনভিত্তি রয়েছে। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে নেই কৃষ্ণেন্দু। তাই আগামী বছর পুরভোট এবং পরের বছর বিধানসভা ভোটই এখন লক্ষ্য কৃষ্ণেন্দুর। তাই যে কোনও ভাবে অন্ততপক্ষে ইংরেজবাজারে নিজের খাসতালুকে ক্ষমতা দখলে রাখতে এই পুরসভাই এখন তাঁর একমাত্র ‘অস্ত্র’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy