Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ, তৃণমূলে সমর্থন কেপিপি-র

কয়েক দিন আগেই বিজেপির পাশে থেকে ভোটে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছিলেন কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি (কেপিপি) নেতা অতুল রায়। এমনকি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে মন্ত্রী গৌতম দেবে’র বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার কথাও বলেছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৬ ০২:৪৭
Share: Save:

কয়েক দিন আগেই বিজেপির পাশে থেকে ভোটে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছিলেন কামতাপুর প্রোগ্রেসিভ পার্টি (কেপিপি) নেতা অতুল রায়। এমনকি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে মন্ত্রী গৌতম দেবে’র বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। শুক্রবার সেই গৌতমবাবুর পাশে বসেই বিজেপি’র সঙ্গে ‘আপাতত’ সম্পর্ক ছিন্ন করে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনের ঘোষণা করলেন অতুলবাবু। তাঁদের কামতাপুরি বা রাজবংশী ভাষাকে রাজ্য স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আগামী দিনে সদর্থক ভূমিকা নেবে, তৃণমূল নেত্রী এবং মন্ত্রী গৌতমবাবুর এই আশ্বাসের পর তাঁরা নতুনভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অতুলবাবুর দাবি। তবে আলাদা রাজ্যের দাবিকে মনের ভিতরে রেখেই তাঁরা এই সমঝোতায় থাকছেন বলেও দাবি করেছেন। যদিও বিরোধীদের অনেকের দাবি, ভোটের আগে এই ধরণের আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি দেওয়াটা বিধিভঙ্গের সামিল। সিপিএমের তরফে নিবার্চনে কমিশনে বিষয়টি জানানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

অতুলবাবুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের জন্য যা করছেন তা ভাবা যায় না। সেখানে সভায় তিনি আমাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ার কথাও বলেছেন। তার পরেই গৌতমবাবুর সঙ্গে আমাদের কথা হয়। উনি আমাদের দাবি নিয়ে আগামী কিছুদিনের মধ্যে কিছু হবে বলেও জানিয়েছেন। তাতে আমরা অনেক আশার আলো দেখছি। তাই তৃণমূলের পাশে থাকছি।’’ তিনি জানান, এখানে রাজ্যের কোনও বিষয় নেই। ওটা আমাদের দলের দাবির মধ্যে থাকবে। আর রাজ্য দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রের। সেখানে রাজ্য পাশে থাকলে তো ভালই। দেশে ১৬-১৭টি রাজ্যের দাবি রয়েছে। কোনওদিন গোর্খাল্যান্ড, বোরোল্যান্ড হলেও কামতাপুরও হবে।

একইভাবে মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেছেন, ‘‘আমি মন্ত্রী হিসাবে কোনও কথাই বলছি না। তৃণমূল নেতা হিসাবে অতুলবাবুদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রাথমিক স্তর থেকে ওঁদের ভাষার সরকারি স্বীকৃতির বিষয়টি যুক্তিযোগ্য। আমাদের নেত্রীও জনসভায় তাকে মান্যতার দেওয়ার ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তাই অতুলবাবুরা আজ আমাদের পাশে এসেছেন।’’ তবে রাজ্য নিয়ে কোনও আলোচনার জায়গা নেই বলে গৌতমবাবু সাফ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওটা এখন অপ্রসাঙ্গিক বিষয় আমাদের কাছে। ভাষার মান্যতাই প্রধান।’’

গত লোকসভা ভোটে বিজেপি’কে উত্তরবঙ্গের ৮টি আসনে সমর্থন করেছিল অতুলবাবুর কেপিপি। তার আগে কুমারগ্রাম আসনের উপ-নিবার্চনেও তাঁরা বিজেপির পাশে ছিল। বিজেপির তরফেও কেপিপি’কে একাধিকবার এনডিএ-র শরিক বলেই ঘোষণা করা হয়েছিল। রাতারাতি এমন শরিক, বিপক্ষ শিবিরে নাম লিখিয়ে ফেলায় কিছুটা অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। অতুলবাবু বলেছেন, ‘‘বিজেপি সঙ্গে আমাদের সমঝোতা ছিল। ভাষা, সংস্কৃতির সংরক্ষণ নিয়ে ওঁরা আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তো কিছু হল না। আপাতত ওদের সঙ্গে আমরা নেই। আর রাজনীতিতে অনেক কিছুই সম্ভব। এখন আমরা তৃণমূলের সঙ্গে আছি। আগামীতে কি হবে তা কী এখন বলত পারব!!!

এদিন দিল্লি থেকে শিলিগুড়ি ফিরেছেন দলের দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন কেপিপি নেতাদের মনের পরিবর্তন হল তা বোঝা দরকার। দলের নেতৃত্ব, কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছি। আমরাও খোঁজখবর নিচ্ছি। দ্রুত আমাদের বক্তব্য সবার সামনে তুলে ধরব।’’ এদিন তৃণমূলের সুরে অতুলবাবু কংগ্রেস-সিপিএমের জোটকে অনৈতিক, সুবিধাবাদী জোট বলেই মন্তব্য করেছেন। যা শুনে সিপিএম নেতা তথা শিলিগুড়ির বাম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘ওঁদের বিরাট নৈতিক জোট হয়েছে। দারুণ বিষয়। বরাবর কেপিপি’র কী ভূমিকা উত্তরবঙ্গে, তা তৃণমূল নেতাদের নিশ্চয়ই অজানা নয়। আর ভোটের আগে ভাষার স্বীকৃতির আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোট! নির্বাচন কমিশনে আমরা অভিযোগ জানাচ্ছি।’’ সেই সঙ্গে অশোকবাবুর সংযোজন, ‘‘রাজবংশী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা ভীষণ সহজ-সরল। তাঁদের উপরে আমাদের অতীতেও আস্থা ছিল, এখনও আছে, আগামী দিনেও থাকবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy