‘‘ধার হিসেবে তৃণমূলকে ভোট দিন। জয়ী হলে ফলঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে আপনাদের দাবিমতো উন্নয়নের কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার’’— মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালিয়াগঞ্জের বোচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের চান্দোইল হাটে নির্বাচনী জনসভায় এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহের সমর্থনে প্রচার চালান রাজীব। ওই জনসভায় তিনি জানান, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কখনও জয়ী হয়নি। অতীতে সিপিএম ও ২০১১ সাল থেকে এই কেন্দ্র কংগ্রেসের দখলে ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই কেন্দ্রের বেশির ভাগ পঞ্চায়েত তৃণমূল দখল করেছে। লোকসভা নির্বাচনে এই এলাকায় জিতেছে বিজেপি।

রাজীবের বক্তব্য, ‘‘এত দিনে কালিয়াগঞ্জের কী উন্নয়ন হয়েছে?’’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি পরিচালিত কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকার রাস্তাঘাট, নিকাশি ও পানীয় জলের পরিষেবা বেহাল। গত ছ’মাসে এলাকার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কালিয়াগঞ্জের কোনও উন্নয়ন করেননি বলেও অভিযোগ করেন রাজীব। তাঁর কথায়, ‘‘এত দিন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র বিরোধী দলের দখলে থাকায় রাজ্য সরকার এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ভিক্ষা হিসেবে ভোট নিলে ফেরত দেওয়ার বিষয় থাকে না। কালিয়াগঞ্জের উপনির্বাচনে তৃণমূলকে ঋণ হিসেবে ভোট দিন।’’ রাজীব আশ্বাস দেন, উপনির্বাচনে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল জয়ী হলে ফলঘোষণার ১৫ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা এখানে এসে জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে এলাকাবাসীর দাবিমতো উন্নয়নের কাজ শুরু করবেন।

কয়েক দিন আগে তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও কালিয়াগঞ্জে প্রচারে এসে এক নির্বাচনী জনসভায় দাবি করেছিলেন, উপনির্বাচনে তৃণমূল জয়ী হলে এই এলাকায় নজরকাড়া উন্নয়ন হবে।

এ দিনের জনসভায় এনআরসি নিয়েও বিজেপিকে বিঁধেছেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে প্রয়োজনে আমরা এক নদী রক্ত দেব। কিন্তু বিজেপিকে কোনও ভাবেই রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করতে দেব না। আপনারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে ভরসা রাখুন। কথা দিচ্ছি, বিজেপি এনআরসি কার্যকর করে এ রাজ্যের কোনও সম্প্রদায়ের মানুষের নাগরিকত্বের অধিকার কাড়তে পারবে না।’’

এ নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দামের দাবি, গত ছ’মাসে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর সাংসদ কোটার ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দে কালিয়াগঞ্জে রাস্তাঘাট, শ্মশান, মুক্তমঞ্চ, ভবন, পানীয় জলের পরিকাঠামো-সহ ৩৩টি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ হয়েছে। তাই এলাকায় উন্নয়ন হয়নি বলে তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এনআরসি লাগু হলেও কালিয়াগঞ্জের বৈধ নাগরিকদের কোনও সমস্যা

হবে না।’’