শান্তিপূর্ণ: নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। ভোট সংক্রান্ত সব ছবিগুলি তুলেছেন চিরঞ্জীব দাস
কথায় বলে, সকাল দেখে বোঝা যায় দিনটা কেমন কাটবে। কিন্তু সোমবার কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে সকালে ভোট দিতে গিয়ে দুই প্রার্থী যে সমস্যার মুখে পড়েছিলেন, দিনভর তার ছিটেফোঁটাও আর দেখা গেল না কোথাও। দু’-একটি বিক্ষিপ্ত অভিযোগ ছাড়া শান্তিতেই ভোট দিলেন সাধারণ মানুষ। একমাত্র কাঁটা, কমলের এগিয়ে গিয়ে তাঁর স্ত্রী ভারতীকে ভোট দিতে সাহায্য করা। বাকি সবই চুপচাপ, শান্তিতে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা দিনের শেষে বলেন, ‘‘কয়েকটি অভিযোগের ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নে ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়েছে।’’
শান্তিপূর্ণ ভোট কীসের ইঙ্গিত? তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহ বলেন, ‘‘কালিয়াগঞ্জের মানুষ এনআরসি রুখতে ও উন্নয়নের স্বার্থে একজোট হয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নীরবে ভোট দিয়েছেন। এ দিন ভোটের ময়দানে তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দলকে দেখা যায়নি। তাই গোলমালও হয়নি। ভোটের ধরন দেখেই বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূল জিতছে।’’
বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারের কথায়, ‘‘লোকসভা ভোটের ফলের হিসেবে কালিয়াগঞ্জ বিজেপির জেতা আসন। উপনির্বাচনে বিজেপির নেতা-কর্মীরা তৃণমূলের প্ররোচনায় পা দিলে গোলমাল হতে পারত। তাতে বিজেপির অনেক ভোটার ভয়ে ভোট দিতেই বার হতেন না হয়তো। আমরা সমর্থকদের নীরবে ভোটকেন্দ্রে পাঠাতে পেরেছি। বিজেপির জয় সময়ের অপেক্ষা।’’
বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী ধীতশ্রী রায়ের বক্তব্য, ‘‘বেশ কিছু বুথে বিরোধীরা বুথ জ্যাম করে সমর্থকদের বাধা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট দিয়েছেন। বিজেপির এনআরসি ও তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এই নির্বাচনে মানুষ কংগ্রেসকে আশীর্বাদ করেছেন। কংগ্রেস জেতার ব্যাপারে আশাবাদী।’’
তবে যে আসনে ছ’মাস আগে তৃণমূলের থেকে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে লিড নিয়েছিল বিজেপি এবং যে ভোটে কংগ্রেস ও সিপিএম ছিল এই দু’দলের পরে, সেখানে হাওয়া যে গেরুয়া শিবিরের দিকে থাকার যথেষ্ট সম্ভাবনা, তা তৃণমূল বা কংগ্রেসের ঘরোয়া আলোচনায় বারবারই উঠে এসেছে। এ দিন ভোট পড়েছে ৮১ শতাংশের বেশি। উপনির্বাচনের পক্ষে ভাল ভোট, বলছেন অনেকেই। এবং গোটা দিনে হাতে গোনা কয়েকটি অভিযোগ ছাড়া ভোট পড়েছে শান্তিতেই।
সকালে অবশ্য কমল ও তপনের একটু অন্য রকম অভিজ্ঞতা ছিল। কমলের ভোট ছিল বাড়ির কাছে বালাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে। সেই সময় ভোটকর্মীদের নথি তৈরি না হওয়ায় তাঁদের প্রায় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অন্য দিকে, তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহ সকাল আটটা নাগাদ ভোট দেওয়ার জন্য স্থানীয় খটোসা নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেন, ইভিএম মেশিন বিকল। তাই তাঁকেও প্রায় আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। পরে ইভিএম মেশিন মেরামতির পরে তিনি ভোট দেন। রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি এ দিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ মহেন্দ্রগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে ভোট দিয়েছেন।
এর মধ্যে এ দিন বিকেলে শহরের উত্তর চিড়াইলপাড়ার একটি বুথে ভোটারদের বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিতে বলার অভিযোগ ওঠে কল্লোল সিংহ নামে এক ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তের গ্রেফতারের দাবিতে তৃণমূল বিক্ষোভ দেখায়। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কল্লোলের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। জেলাশাসকের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশন অভিযুক্ত ভোটকর্মীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy