Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
tmc leader

বাম আমলেই ‘গলার কাঁটা’ কালীপদ 

এক দিকে, গঙ্গারামপুরের পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী তথা সিপিএমের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা নারায়ণ বিশ্বাস।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত 
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:২৩
Share: Save:

বাম আমলে লাল দুর্গ গঙ্গারামপুরে শুকদেবপুর অঞ্চল ‘গলায় কাঁটা’র মত ছিল সিপিএমের। কাঁটাটি ছিলেন কালীপদ সরকার। বামেদের সব লড়াই সংগ্রামের পাল্টা জবাব দিয়ে সমানে লড়ে ওই এলাকার কর্তৃত্ব থেকে একচ্ছত্র আধিপত্য ধরে রেখেছিলেন সদ্য প্রয়াত তৃণমূল নেতা কালীপদ ওরফে কালিয়া। খুন, পাল্টা খুনের রাজনীতিতে তখন দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গেই প্রথম সারিতে উঠে এসেছিল উত্তরবঙ্গের গঙ্গারামপুর।


এক দিকে, গঙ্গারামপুরের পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী তথা সিপিএমের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা নারায়ণ বিশ্বাস। অন্য দিকে, প্রাক্তন স্বাস্হ্য প্রতিমন্ত্রী সিপিএমের লড়াকু নেত্রী মিনতি ঘোষ, জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী, সভাধিপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, সীতারাম কিস্কুরা। অন্য দিকে, বিরোধী তৃণমূল নেতা বিপ্লব মিত্রের অনুগামী শুকদেবপুর অঞ্চলের নেতা কালীপদ। তাঁর নামে ওই অঞ্চলে ঝোলানো ‘কালিয়া মোড়’ বোর্ড দেখে দিনের বেলাতেও সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতেন অনেক বাম নেতা।


২০০০ সাল থেকে বিপ্লবের হাত ধরে তৃণমূলে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি থেকে জেলা কমিটির সদস্য। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ থেকে সহকারী সভাধিপতি—উত্থানের সঙ্গেই সমান তালে বিতর্কও জড়িয়েছেন কালী। একের পর এক খুনের মামলায় অভিযুক্ত কালীপদকে বছর দুয়েক আগে পুলিশের দেহরক্ষী নিতে হয়। একাধিক খুনের মামলায় অভিযুক্ত নেতাকে দেহরক্ষী দেওয়া নিয়ে বিরোধীরা সরব হন।


এ দিন সিপিএমের প্রাক্তনমন্ত্রী তথা জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, সে সময় দলের জোনাল কমিটির সম্পাদক সীতারাম কিস্কুর ভাই সরকার কিস্কুর পাশাপাশি বৈদ্যনাথ, ভবানি, অনন্ত-সহ ১১ জন দলীয় কর্মী খুন হন। তৃণমূল নেতা পরেশ সরকার-সহ আরও ৬ জনকে সে সময় গুলি করে, কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ এই সব খুনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন কালী। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ দিন বিপ্লব অবশ্য ফোন ধরেননি।


তবে প্রাক্তন তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ এ দিন দাবি করেন, ‘‘রাজনৈতিক হানাহানি হলেই ওঁর নাম জড়িয়ে দেওয়া হত। কালীপদ সিপিএমের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই করেছেন। ওঁর চলে যাওয়াটা দলের পক্ষে বড় ক্ষতি।’’ ‘অসুস্থ’ শরীরে কালীপদ এ দিন কেন গন্ডগোলের মধ্যে গিয়েছিলেন তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে জানিয়ে অর্পিতা বলেন, ‘‘দলে দুষ্কৃতীরাজ বন্ধ করা হবে।’’


গঙ্গারামপুর শহর পেরনোর ঠিক আগে টাঙন নদীর সেতুর শেষে কালীতলা থেকে ডান দিকের সরু পিচরাস্তা থেকে শুরু শুকদেবপুর অঞ্চল। কিছুদিন আগেও মোড়ের মাথায় গাছে সাঁটা বোর্ডে লেখা ছিল ‘কালিয়া মোড়’। এখন ফিকে হয়েছে। কিন্তু এলাকায় ‘কালিয়া ডাকাত’ বলে পরিচিতিটা এখনও লোকমুখে শোনা যায়।
দুর্নাম হলেও ওই ডাকে অখুশি হতেন না বলে জানান দলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা। তাদের মতে, এতে এলাকায় কালীপদর প্রতাপ বহন করে চলতো। এ দিন তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে অবসান ঘটল প্রায় ২০ বছরের এক লড়াকু নেতার বিতর্কিত অধ্যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM tmc leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy