প্রতীকী ছবি।
ধনকৈল গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক অভিযুক্তের পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে বাড়িতে এসে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকিতে আতঙ্কিত নির্যাতিতার পরিবার। এ দিকে ৩১ ডিসেম্বর রাতে পরপর দু’বার এক মহিলাকে গণধর্ষণে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্ৰেফতার করা হলেও এখনও এক অভিযুক্ত অধরা। এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন নির্যাতিতার পরিবার-সহ ধনকৈল এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন দুপুরে বিজেপির মহিলা মোর্চার এক প্রতিনিধি দল নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। বিকেলে যান কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তপনদেব সিংহ ও প্রদেশ তৃণমূল সম্পাদক অসীম ঘোষ, কালিয়াগঞ্জ পুরসভার উপপুরপ্রধান বসন্ত রায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অমিত দেবগুপ্তরা।
গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কালিয়াগঞ্জের ধনকৈলে নির্যাতিত ওই মহিলা পরের দিন তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করলেও এক জন এখনও অধরা। এ দিকে অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে ঘটনা মিটমাট করে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে ওই অভিযুক্তের পরিবার। ফলে ভয়ে রাতে চোখের পাতা এক করতে পারছে না নির্যাতিতার পরিবার। এ দিকে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার কোনও মন্তব্য করেননি।
এ দিন নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ একদল মহিলা বাড়িতে এসে ডাকাডাকি শুরু করে। ভয়ে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে থাকি। বাইরে থেকে একের পর কিছু পরিচিত গলা ভেসে আসে। অভিযুক্তের মা ও স্ত্রীর কণ্ঠস্বর চিনতে কোনও অসুবিধে হয়নি। সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিল। এত রাতে দরজা খোলার সাহস পাইনি। বাইরে থেকে এক অভিযুক্তের মা বলেন, আইনি লড়াই করতে গেলে তাঁদেরও যেমন খরচ হবে, আমারও তেমন খরচ হবে। এর পরেই মামলা মিটমাট করে নিতে মোটা টাকার দর তুলতে থাকে ওই অভিযুক্তের পরিবার।’’
কাঁদতে কাঁদতে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ের উপরে যারা পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। মরে যাব তবুও টাকার ফাঁদে পা দেব না। বাবা-হারা তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে লটারির টিকিট বিক্রি করে অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছি। ভাঙাচোরা বাড়িতে রাতের অন্ধকারে যে ভাবে ওরা আসছে, তাতে খুবই আতঙ্কে আছি।’’ এ দিকে ওই ঘটনার পর থেকে নির্যাতিতা কার্যত ঘরেই বন্দি।
এ দিকে দুপুরে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন বিজেপির মহিলা মোর্চা। ছিলেন জেলার সভানেত্রী দোলা মোদক প্রমুখ। দোলা বলেন, ‘‘কলিয়াগঞ্জে এমন নৃশংস ঘটনা এর আগে ঘটেনি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা, সেই রাজ্যে মহিলাদের গণধর্ষণ হচ্ছে, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’’
এ দিকে এ দিন বিকেলে নির্যাতিতা পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক তপনদেব সিংহ বলেন, ‘‘মহিলার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। আর্থিক দিক দিয়ে সব রকম সাহায্য করা হবে। আইনি সহযোগিতাও করা হবে। অপরাধীরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy