৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের জেরে চলতি বছরে শীতের মরসুমে এখনও পর্যন্ত একটিও বরাত মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েছে রায়গঞ্জের একমাত্র সক্রিয় যাত্রাদল বন্দর যুবনাট্য সম্প্রদায়। এই পরিস্থিতিতে টাকার অভাবে আগামী ২৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ দিনাজপুরের বোয়ালদারে যাত্রা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সম্প্রদায়ের যাত্রাশিল্পীরা। উল্লেখ্য, দুই দিনাজপুর ও মালদহের ৮টি যাত্রাদল নিয়ে অনুষ্ঠিত ওই প্রতিযোগিতায় বন্দর যুবনাট্য সম্প্রদায় ২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি দু’বছর অন্তর পরপর চারবার চ্যাম্পিয়নের শিরোপা পেয়েছে। তাই তাঁদের যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে এ বছর ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য, সম্প্রদায়ের যাত্রাশিল্পীরা নিজেরাই পকেট থেকে চাঁদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রদায়ের অভিযোগ, যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে গত এক দশক ধরে জেলা প্রশাসনের কাছে সরকারি আর্থিক অনুদান চেয়ে একাধিক বার আবেদন জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি।
প্রবীণ যাত্রাশিল্পী প্রণব বসাকের দাবি, প্রতি বছর শীতের মরসুমে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় সম্প্রদায়ের ১০টিরও বেশি যাত্রাপালা করেন। তার মধ্যে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই ৬টি যাত্রাপালার বরাত থাকে। তিনি বলেন, ‘‘নোট বাতিলের জেরে এ বছর বিভিন্ন ক্লাব, পাড়া, স্বেচ্ছাসেবী বা ধর্মীয় সংগঠন, কেউই এখনও পর্যন্ত যাত্রার বরাত দেননি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি কারও হাতেই পর্যাপ্ত টাকা নেই। ফলে আর্থিক সঙ্কটের জেরে এ বছর বোয়ালদারে যাত্রা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে।’’
আরেক প্রবীণ অভিনেতা তারাপদ দাসের দাবি, ‘‘লোকশিল্পীদের রাজ্য সরকার প্রতি মাসে আর্থিক অনুদান দেয়। কিন্তু গত এক দশকে একাধিকবার আবেদন জানিয়েও কোনও অনুদানই পাইনি।’’ জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক পাসাং দর্জি বলের দাবি, রাজ্য সরকারের যাত্রা অ্যাকাডেমি থেকে দুঃস্থ যাত্রাশিল্পীদের আর্থিক অনুদান দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সম্প্রদায়ের তরফে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করলে তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন।
সম্প্রদায়ের দাবি, একটি যাত্রাপালার আয়োজন করতে তাঁদের ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এত দিন বরাত অনুযায়ী একেকটি যাত্রাপালা করে তাঁদের গড়ে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা লাভ হত। তবে যাত্রাশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সামান্য লাভের টাকা থেকে কেউই সাম্মানিক নিতেন না। সেই টাকা দিয়ে বিভিন্ন যাত্রাপালার মহড়ার খরচ মেটানো হত। এ বার শেষ পর্যন্ত সম্প্রদায়ের যাত্রাশিল্পীরা নিজেরা চাঁদা দিয়ে খরচ তুলতে সক্ষম হবেন, এই বিশ্বাস নিয়েই এ বছর বোয়ালদারে ওই যাত্রা প্রতিযোগিতায় মহিষাসুর বধ পালা অভিনয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy