মোহন বসু।—ফাইল চিত্র
আবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু। এ দিকে পুরভোট প্রায় শিয়রে। মোহনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে চিন্তার পাশাপাশি এখন দলের অন্দরে তৈরি হয়েছে আরও একটি চিন্তা। মোহন অসুস্থ থাকলে আসন্ন নির্বাচনে দলের মুখ কে হবেন জোর চর্চা শুরু হয়েছে তা নিয়ে।
সেরিব্রাল অ্যাটাকের শিকার হয়ে সম্প্রতি মোহন বসু দিল্লিতে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন। গত সপ্তাহে ফিরে এসে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। জলপাইগুড়ির বাবুপাড়ার একটি নার্সিংহোমে তিনি ভর্তি। নার্সিংহোম সূত্রের খবর, তাঁকে টিউবের সাহায্যে খাওয়ানো হচ্ছে। ঘনিষ্ঠদের দাবি, প্রতিদিনই নীচুস্বরে পুরসভার কাজকর্ম, পুরভোট ও শহরের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি জানতে চাইছেন। কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী বাছাই নিয়ে প্রকাশ্যে যে টানাপড়েন চলছে তা নিয়ে উষ্মাও প্রকাশ করেছেন বলে ঘনিষ্ঠদের দাবি। এখন যে ক’টি প্রশ্ন নিয়ে জোর চর্চা হচ্ছে, তা হল টানা সতেরো বছর ধরে জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান থাকা মোহন বসু কি এ বার ভোটে লড়বেন? লোকসভা ভোটে দলের বিপর্যয় এবং জেলা নেতৃত্বে রদবদলের পরে তৃণমূল কী আদৌ মোহন বসুকে মুখ করে লড়বে? যদি এই দুই প্রশ্নের উত্তর ‘না’ হয়, তাহলে তৃতীয় প্রশ্ন, মোহন বসুর বিকল্প কে হবেন?
মোহন ঘনিষ্ঠদের দাবি, ফেব্রুয়ারির গোড়াতে অসুস্থ হয়ে দিল্লি যাওয়া-আসার পরেও চেয়ারম্যান কথাবার্তা বলছেন। এখনও পর্যন্ত এ বার ভোটে লড়বেন না বলে মোহন কোনওরকম ইঙ্গিত দেননি, এমনটাই দাবি তাঁর ঘনিষ্ঠদের। বরং নিয়মিত সংগঠনের খবরাখবর রেখেছেন। অর্থাৎ অসুস্থ হলেও ভোট প্রস্তুতিতে মোহন বসু সময় দিচ্ছেন বলেই তাঁদের একাংশের দাবি।
২০০৩ সালে মোহন প্রথমবার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তারপরে ২০০৫, ২০১০ সালে কংগ্রেস মোহনকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী করে লড়ে বোর্ড দখল করে। ২০১৫ সালের পুরভোটে তৃণমূলেরও মুখ ছিলেন তিনি। পোড়খাওয়া এই নেতাকে এ বারেও ভোটে মুখ করা হবে কি? এর উত্তরে একবারও সরাসরি ‘হ্যাঁ’ বলছেন না জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। এ দিনও জেলা সভাপতির উত্তর, “রাজ্য নেতৃত্ব এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমাদের উন্নয়নের মুখ হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা ভোটে জিতে আসবেন, তাঁরাই ঠিক করবেন কে চেয়ারম্যান হবেন।”
দল সূত্রের খবর, পুরভোটে ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তির’ কোনও আইনজীবী, শিক্ষক বা চিকিৎসককে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী করতে রাজ্য নেতৃত্বকে প্রস্তাব করেছে জেলা নেতৃত্ব। প্রাথমিক ভাবে একজন আইনজীবী, দু’জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। দু’টি বিষয়ের ওপরে সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে বলে তৃণমূল কর্মীরা মনে করছেন। প্রথমত মোহন বসু কখন সুস্থ হবেন এবং দ্বিতীয়ত রাজ্য নেতৃত্ব কী বলবেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy