জলপাইগুড়ি পুরসভা। — ফাইল চিত্র।
কর্মীদের বেতন থেকে পিএফের টাকা কেটেও জমা না দেওয়ার অভিযোগের জেরে তদন্তের মুখে পড়েছে জলপাইগুড়ি পুরসভা।
অভিযোগ, তিন বছর হতে চলল পিএফ অফিসে কর্মীদের বেতন থেকে কাটা টাকার কোনও অংশই জমা করেনি পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, অন্তত দু’কোটি টাকা পিএফ খাতে বকেয়া রয়েছে। প্রতি মাসে পুরসভা অন্তত সাড়ে চারশো কর্মীর বেতন থেকে পিএফ কাটে। কর্মীদের টাকা কেটেও, সে টাকা জমা না করায় জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক পিএফ অফিস স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তৃণমূল পরিচালিত পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। কর্মীদের বেতন থেকে পিএফ কেটেও সেই টাকা জমা দেওয়া হল না কেন? জলপাইগুড়ির পুরপ্রধান পাপিয়া পাল বলেন, “বকেয়া দীর্ঘদিনের। সে সব খতিয়ে দেখতে হবে।”
পিএফ অফিসের জলপাইগুড়ি আঞ্চলিক কমিশনার রাজেশকুমার মিনা বলেন, “পিএফ বকেয়া থাকায় আমরা নোটিস করেছি। এ ক্ষেত্রে আইন মেনে ব্যবস্থা হবে।”
পিএফ অফিসের তরফে পুরসভার কর্মীদের হাজিরা খাতা, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য, আয়-ব্যয়ের হিসাব, আয়কর জমা দেওয়ার তথ্য, বেতন প্রদানের খতিয়ান-সহ এক গুচ্ছ নথি জমা দিতে নোটিস করা হয়েছে পুর কর্তৃপক্ষকে। পিএফ অফিসে তলব করা হয়েছে পুর-কর্তাদেরও। গত মাসে পুরসভার তরফে পিএফ অফিসে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, কয়েক দিন পরে, সব নথি নিয়ে কর্তারা দেখা করবেন। পিএফ অফিস সূত্রের খবর, চলতি মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। চলতি আর্থিক বছরের শেষ মাস, অর্থাৎ, মার্চের মধ্যে বকেয়া টাকা জমা না দিলে, অথবা সন্তোষজনক জবাব না দিলে জলপাইগুড়ির পুরসভার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার পিএফ বকেয়া দীর্ঘদিন ধরেই। তবে ২০২০ সালের এপ্রিলের পর থেকে একেবারেই টাকা জমা করছে না পুরসভা, দাবি পিএফ অফিসের।
পুরসভা সূত্রের দাবি, গত তিন বছর ধরে এই টাকা কর্মীদের বেতন থেকে কেটে অন্যান্য খাতে খরচ করা হয়েছে। তবে এই মাসের মধ্যে কী ভাবে টাকা শোধ দেওয়া হবে তার কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। ওই সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, কোনও উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে পিএফের টাকা মেটানো সম্ভব নয়। কারণ, সে ক্ষেত্রে তহবিলে অনিয়মের মামলা হতে পারে।
এই অবস্থায় একমাত্র উপায় হল পুরসভার নিজস্ব খাত থেকে টাকা মেটানো, যা এই মুহূর্তে অসম্ভব বলে পুর আধিকারিকদের একাংশের দাবি। পুরসভার নিজস্ব খাতে বর্তমানে মাত্র কয়েক লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে, যা দিয়ে পুরসভার দৈনিক খরচ চলে। সে খাত থেকে এত মোটা চাকার বকেয়া মেটানো সম্ভব নয়। পুরপ্রধান পাপিয়া পাল বলেন, “আমরা পিএফ অফিসে চিঠি দিয়ে সময় চেয়েছি। কিছু কিছু করে টাকা মেটানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছি। নিজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করছি।”
পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সমিতির সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া বাড়তে বাড়তে দু’কোটি টাকার বেশি হয়ে গিয়েছে। বহু কর্মী পিএফের টাকা তুলতে পারছেন না। পুর কর্তৃপক্ষের এই উদাসীনতার তীব্র নিন্দা করছি। দ্রুত সকলের টাকা পরিশোধ করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy