—প্রতীকী চিত্র।
দুয়ারে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে কি নেশার প্রতি আসক্তি বাড়ছে? জলপাইগুড়ি জেলার আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান অন্তত তেমনই দেখাচ্ছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ জুন থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলায় মদ বিক্রির রেকর্ড অতীতকে ছাপিয়ে গিয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এই পর্বে মদ বিক্রির হার বেড়েছে ২২ শতাংশ এবং রাজস্ব বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। গত বছর এই সময় মদ বিক্রির রাজস্ব বাবদ আয় হয়েছিল প্রায় ২৮ কোটি টাকা। এ বছর তা বেড়ে ৩৪ কোটি। গোটা জুন মাসে যে পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে, তার অর্ধেক বিক্রি হয়েছে শেষ সপ্তাহে। এই ‘সমাপতন’ দেখে আবগারি কর্তাদের অনুমান, পঞ্চায়েত ভোটই রাজস্বে লক্ষ্মীলাভ ঘটিয়েছে। মদ খাইয়ে ভোট কেনার চেষ্টা নিয়ে নানা অভিযোগও উঠছে। সব দলই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মদ-প্রলোভনের অভিযোগ তুলেছে।
আগামী শনিবার পঞ্চায়েত ভোট। সপ্তাহখানেক আগে থেকে বৃষ্টি চলছে জেলায়। বেশির ভাগ দিনই বৃষ্টিতে প্রচার বিঘ্নিত হচ্ছে। ডান-বাম সব পক্ষই ছোট ছোট কর্মিসভা করছে বা এলাকাবাসীকে নিয়ে কোনও জায়গায় আলোচনা চলছে। সূত্রের খবর, বৃষ্টির রাতে আলোচনার শেষে ‘দু’পাত্তর’ আবদার করে বসছেন কেউ কেউ। এক প্রবীণ নেতার কথায়, “ভোটের আগে কত আবদার-বায়নাই সামলাতে হয়। কাউকে চটানোও যায় না।”
আবগারি দফতরের এক কর্তার কথায়, “জুনের শেষ সপ্তাহে মদের বিক্রি বেড়েছে। জুলাইয়ের শুরুটাও তুলনামূলক ভাল।’’ গ্রাম এলাকায় মদ বিক্রি বেশি হয়েছে বলেও দফতর সূত্রের দাবি। এর বেশির ভাগটাই বোতল বিক্রি থেকে আয় হয়েছে। এর মধ্যে দেশি মদের বিক্রির হারই বেশি বলে দাবি। ভোটের আগে মদের দোসর মুরগিও। গ্রামগঞ্জে, বিশেষত চা-বলয়ে, মুরগির মাংসও দেদার বিক্রি হচ্ছে। যার তুলনায় শহরের চেয়ে গ্রামে মাংসের দাম চড়া। বুধবার জলপাইগুড়িতে এক কেজি মুরগির মাংস সর্বোচ্চ ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যেখানে শহর থেকে দূরে বেরুবাড়ি হাটে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা কেজি দরে মুরগি বিক্রি হয়েছে। বেরুবাড়ির কংগ্রেস নেতা নতিবর রহমান বলেন, “ভোটের আগে পিকনিক চলছে। মুরগির মাংসই জনপ্রিয়। দামও কম, রান্নায় সময়ও কম লাগে।” চা-বলয়ে ভোটের আগে মাংস-ভাত খাওয়ানোর প্রথা দীর্ঘদিনেরই।
গ্রামে মুরগির সরবরাহ নিয়ে চিন্তা নেই। অনেকেই বাড়িতে মুরগি পোষেন। তার পরেও দাম বাড়ল কেন? মুরগি ব্যবসায়ীদের দাবি, গৃহস্থ মুরগি পোষেন মূলত ডিমের জন্য। মাংসের জন্য মুরগি খামার থেকেই আসে। তাই চাহিদা বাড়লে বাজারের নিয়মেই দাম কিছুটা বেড়ে যায়।
মদ-মাংস নিয়ে রাজনৈতিক অভিযোগও চলছে। ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী অণিমা রায়ের অভিযোগ, “বিজেপি প্রার্থী প্রতিদিন দেদার মদ এবং মাংস-ভাত খাইয়ে ভোট পেতে চাইছেন।” যার উত্তরে বিজেপি প্রার্থী মামণি রায়ের মন্তব্য, “যে কর্মীরা দিন-রাত প্রচার করে নিজের বাড়ি ফেরার সময়টুকু পাচ্ছেন না, তাঁদের একটু ভাত রেঁধে খাওয়াচ্ছি। তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। ও সব মদ-টদ আমাদের কেউ খায় না।”
তথ্য সহায়তা: অজিত বণিক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy