Advertisement
০২ অক্টোবর ২০২৪

কিশোরীর নিগ্রহে তদন্তে প্রশাসন

এ দিন সঞ্চিতা জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে বালুরঘাটের চাইল্ডলাইন পরিচালিত হয়।

বালুরঘাটের চাইল্ড লাইনের দফতর। নিজস্ব চিত্র

বালুরঘাটের চাইল্ড লাইনের দফতর। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৮
Share: Save:

চাইল্ডলাইনে থাকা এক কিশোরীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে বুধবার তদন্ত শুরু করল জেলা প্রশাসন। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে চাইল্ডলাইন কার্যালয়ে গত বছর ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ। গত মাসে ওই অনিয়মের ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হন চাইল্ডলাইনের কোঅর্ডিনেটর সঞ্চিতা কর্মকার ও তিন কর্মী। এর পরেই চাইল্ডলাইন দফতর থেকে সঞ্চিতাদের অপমান করে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তার পরেই তাঁরা চাইল্ডলাইন কেন্দ্রটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার একাধিক কর্মীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তের দাবি করেন।

অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব ঘোষ বলেন, ‘‘ওই অভিযুক্ত কর্মী বেলাল মণ্ডলের বিরুদ্ধে জুভেনিয়াল জাস্টিস বোর্ডকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। সিডব্লিউসিকেও তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’’

এ দিন সঞ্চিতা জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে বালুরঘাটের চাইল্ডলাইন পরিচালিত হয়। চলতি বছরের প্রথমে তিনি চাইল্ডলাইন কোঅর্ডিনেটরের দায়িত্ব নেন। তাঁর অভিযোগ, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ওই কিশোরীর সঙ্গে চাইল্ডলাইনের কর্মী বেলাল অশালীন আচরণ করেন। সে সময় রাতে কেন্দ্রটিতে এক জনও মহিলা কর্মী দায়িত্বে ছিলেন না। অথচ উদ্ধার হওয়ার পরে চাইল্ডলাইনের জিম্মায় থাকা শিশু ও নাবালিকাদের সুরক্ষা ও দেখভালের জন্য বিশেষ করে রাতে মহিলা কর্মীদের থাকা বাধ্যতামূলক। এর পরে নাবালিকাদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতে (সিডব্লিউসি) হাজির করাতে হয়। সিডব্লিউসির বিচারে কাউকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কোনও নাবলিকাকে পাঠানো হয় সরকারি হোমে। কিন্তু বালুরঘাটের কেন্দ্রে নিগ্রহের ঘটনার রাতে, এমনকি তার আগের ও পরের রাতেও কোনও মহিলাকর্মী ডিউটিতে ছিলেন না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

গত ১৭ জুলাই নিগৃহীতার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক চাইল্ডলাইনে একপ্রস্ত তদন্ত করে যান বলে সঞ্চিতার দাবি। কিন্তু তার আগে চাইল্ডলাইনের পূর্বতন কোঅর্ডিনেটর তথা বর্তমান সিডব্লিউসি সদস্য সুরজ দাস কেন্দ্রে ঢুকে ওই দিনের কর্মীদের অ্যাটেন্ড্যান্স রেজিস্ট্রারে কারচুপি করে নমিতা দাস মণ্ডলের দিনের ডিউটি কেটে ওই রাতের ডিউটিতে নাম ঢুকিয়ে দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করলে সঞ্চিতার সঙ্গে মমিতাকেও ধাক্কা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

সুরজ বলেন, ‘‘অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক তদন্ত হচ্ছে। তবে অ্যাটেন্ড্যান্স রেজিস্ট্রার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই দেখতে গিয়েছিলাম।’’ ওই সংস্থার অধিকর্তা রবীন্দ্রনাথ মিড্ডে অবশ্য দাবি করেন অ্যাটেন্ড্যান্স রেজিস্ট্রার বদলে ফেলতে তিনি কাউকে নির্দেশ দেননি। সঞ্চিতাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগও মিথ্যা বলে দাবি করেন। জেলা সিডব্লিউসির চেয়ারম্যান দেবাশিস মজুমদার বলেন, ‘‘জেলাশাসককে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Molestation Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE