Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

‘দখল তো, অনুমতি লাগবে না’ 

রবিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল একটি বাড়িতে দোতলা তৈরির কাজ চলছে। কারা বানাচ্ছে জিজ্ঞেস করতেই বেরিয়ে এলেন এক ব্যক্তি।

নির্মাণ: শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় চলছে দোতলা নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

নির্মাণ: শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় চলছে দোতলা নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

শুভঙ্কর চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫৫
Share: Save:

লোহার কাঠামো তৈরি করে চলছে দোতলা তৈরি। একটি দু’টি নয়, তৈরি হচ্ছে এরকম একাধিক নির্মাণ। শিলিগুড়ি জংশন এলাকায় এসজেডিএ দফতরের ঠিক উল্টোদিকে চলছে এই কাজ। স্থানীয়দের একটি অংশের অভিযোগ, রেলের জমি দখল করে লোহার কাঠামো তৈরি করে ওই কাজ চলছে। সেসব লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছে একটি অসাধু চক্র।

রবিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল একটি বাড়িতে দোতলা তৈরির কাজ চলছে। কারা বানাচ্ছে জিজ্ঞেস করতেই বেরিয়ে এলেন এক ব্যক্তি। নিজেকে ওই বাড়ির মালিক পরিচয় দিয়ে তিনি জানালেন, অনেকদিন আগেই কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের কাছ থেকে ওই জমি কিনেছেন তিনি। দোতলা বানানোর জন্য ২ লক্ষ টাকাও দিয়েছেন বলে জানান তিনি। কাদের কাছ থেকে জমি কিনেছেন? বলতে চাননি ওই ব্যক্তি। নিজের নামটাও জানাতে চাইলেন না। এটা তো রেলের জমি, অনুমতি নিয়েছেন? প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, ‘‘এটা দখলের জমি তো। কোনও অনুমতির দরকার নেই। আমার মতো অনেকেই আছে।’’

যেখানে দাঁড়িয়ে এই কথা হচ্ছিল তার আশেপাশে এরকম অনেক ভবনই তৈরি হয়ে গিয়েছে। তার একটিতে যেতেই আর একজন ব্যক্তি এসে নিজেকে বাড়ির মালিক পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘‘আমরা রেলের সঙ্গে বুঝে নেব। রাজ্য সরকারের এখানে কিছু করার নেই। রেলের অনেক জমি দখল হয়েছে। আমরাও দখল করেছি।’’ কথাবার্তা চলার মাঝেই তিন-চারটে মোটরবাইকে কয়েকজন হাজির হলেন। নিজেদের ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে তাঁরা জানান, রেলের উপর মহলে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে, কেউ তাঁদের কিছুই করতে পারবে না।

শিলিগুড়ি শহরে বিধান মার্কেটের অবৈধ নির্মাণ নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। শনিবার দীনবন্ধু মঞ্চে নাগরিক সম্মেলন করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সেখানেও বাসিন্দারা শহরজুড়ে সরকারি জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে সরব হন। একদিকে মন্ত্রী যখন অবৈধ কারবারের হাত থেকে শিলিগুড়িকে বাঁচানোর ডাক দিয়েছেন, তখনই জংশন এলাকায় এসজেডিএ দফতরের উল্টোদিকে রেলের জমি দখল করে একের পর এক বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, সেসব তৈরি করে তা বিক্রি হচ্ছে, দোকানদারদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে মোটা টাকার সেলামি। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটা অংশ চাইছেন এই অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হোক। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও রেলকে চাপ দেওয়া হোক, চাইছেন তাঁরা।

শিলিগুড়ি জংশন, শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন এলাকায় রেলের জমি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার পদমর্যাদার এক রেল আধিকারিক বলেন, ‘‘এসজেডিএর সামনের সমস্ত জমি রেলের। ওই এলাকায় সব নির্মাণ অবৈধ। ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় খানিকটা জমি দখলমুক্ত করে লোহার বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বাকি জমি দখলমুক্ত করতে অভিযান চালানো হবে।’’ আইনগত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা।

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Construction Land Indian Railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy